অধিকার আদায়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মিয়ানমারের নবনির্বাচিত মুসলিম পার্লামেন্ট সদস্য
মিয়ানমারে নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের অধিকারের জন্য লড়াই করার আত্মপ্রত্যয়ের কথা জানিয়েছেন দেশটিতে গতকালের নির্বাচনে বিজয়ী মুসলিম প্রার্থী সিথু মং। ৩৩ বছর বয়সী এই যুবক অং সান সু চির ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দলের ১,১০০ এর বেশি প্রার্থীর মধ্যে মাত্র দুজন মুসলিমের একজন।
মিয়ানমারে জনসংখ্যার চার শতাংশ মুসলিম চূড়ান্ত বৈষম্যের শিকার বলে পুরনো অভিযোগ রয়েছে।
ইয়াঙ্গুন শহরের কেন্দ্রীয় এলাকার সংসদীয় আসনের প্রার্থী সিথু ভোটারদের প্রতিক্রিয়া দেখেই বুঝেছিলেন যে তিনি জিততে চলেছেন। তবে, ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে যে তিনি জয়ী হবেন, এতটাও আশা করেননি তিনি।
সিথু মংয়ের নির্বাচনী এলাকার ভোটাররা ধর্ম ও জাতিগত দিক থেকে বৈচিত্র্যময়। ৩০ হাজার ভোটারের মধ্যে বৌদ্ধ ও মুসলিম প্রায় সমান সমান। পাশাপাশি ভোটারদের মধ্যে রাখাইন, চীনা ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত সংখ্যালঘুরাও আছেন।
জয়ের পর তার প্রতিশ্রুতি, ‘আমি সব ধর্মের জনগণের জন্য কাজ করব, বিশেষ করে যারা বৈষম্যের শিকার, নিপীড়িত বা মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত।’
সিথু মং কেবল মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করবেন না। এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমার এলাকার কোনো মানুষের প্রতি অন্যায় হলে, আমি তাদের রক্ষা করব।’
তবে, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা বলতে রাজী হননি তিনি। রোহিঙ্গা বাদে দেশটিতে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মুসলিমদের নাগরিকত্ব থাকলেও, তাদেরকেও বৈষম্যের শিকার হতে হয় বলে জানান সিথু মং। এমনকি নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে তাকে কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ধরনা দিতে হয়েছে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে।
সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সিথু মং বলেন, ‘যারা এর মধ্যে দিয়ে যাননি, তারা এটা বুঝবে না।’
কট্টরপন্থী বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী চেতনার মধ্যে, ২০১৫ সালের নির্বাচনে তাকে এনএলডির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনায় রাখা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত আর তাকে প্রার্থী করা হয়নি। মুসলিম সম্প্রদায়ের কেউই সেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি।
সিথু ছাড়াও এবার এনএলডি দলের উইন মিয়া মিয়া (৭১) মান্দালয়ে জয় পেয়েছেন।
Comments