যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে নীরব উত্তর কোরিয়া

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি উত্তর কোরিয়া। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের পছন্দের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা কম।

সিএনএন জানায়, মার্কিন নেতাদের মধ্যে কেবল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পই ব্যক্তিগতভাবে কিমের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। তিনি উত্তর কোরিয়ার পক্ষে বিশ্ব মঞ্চে এক ধরনের ‘বৈধতা’ও তৈরি করতে পেরেছেন। যদিও এই প্রচেষ্টাগুলো পরে থেমে যায়।

প্রেসিডেন্ট ওবামা ও ট্রাম্পের অধীনে উত্তর কোরিয়ার নীতিমালার জন্য নিযুক্ত সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত জোসেফ ইউন বলেন, ‘আমার ধারণা ট্রাম্প না জেতায় উত্তর কোরিয়া হতাশ হয়েছে। তাদের জন্য ট্রাম্পের ক্ষমতায় থাকা একটা বড় বিষয়। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে তিনটি শীর্ষ সম্মেলন, বৈঠকই এটার ইঙ্গিত দেয়।’

হোয়াইট হাউজে চার বছর দায়িত্ব পালনকালে কিমের সঙ্গে ট্রাম্পের বিভিন্ন সময়ে চিঠি বিনিময় হয়েছে বলে জানা যায়। ট্রাম্প সেসব চিঠিকে ‘প্রেম পত্র (লাভ লেটার)’ বলে উল্লেখ করেন। দুই নেতার মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে চার বছরে নানা সমালোচনা ও গুঞ্জন তৈরি হয়।

অন্যদিকে, কিমের সঙ্গে যোগাযোগ নিয়ে ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেন জো বাইডেন। সর্বশেষ প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে কিমকে ‘অপরাধী’ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। এ বছর নির্বাচনী প্রচারণার পুরো সময় জুড়েই উত্তর কোরিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন বাইডেন।

উত্তর কোরিয়া নিয়ে বাইডেন পরবর্তীতে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কিনা তা এখনো অস্পষ্ট। তিনি হোয়াইট হাউজে প্রবেশের পর তার অগ্রাধিকারগুলো কী হবে সেসব উল্লেখ করেছেন। সেখানে উত্তর কোরিয়া নিয়ে কিছু বলা হয়নি। এ বিষয়ে শিগগির কোনো বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনাও নেই।

তবে, বাইডেন একটি বিষয় স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, কোনো পূর্বশর্ত ছাড়া তিনি কিমের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি নন।

এদিকে, নতুন মার্কিন প্রশাসনের শুরুর দিকেই উত্তর কোরিয়ার এক ধরনের উস্কানি দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার ঠিক কয়েক সপ্তাহ পরই পিয়ংইয়াং একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল। বাইডেনের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটবে কিনা এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত নন।

সিওলের ইওনসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক জন ডেলুরি বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ানরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সামনে কী করতে যাচ্ছে তা টেলিগ্রাফ করে। আপনি যদি তাদের বক্তব্যগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনেন তবে বুঝতে পারবেন- তারা কোথায় চলেছে বা কী করতে যাচ্ছে সেটার একটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তবে, কোনো বড় ধরনের উস্কানি বা পরীক্ষা করার পরিকল্পনার সংকেত এখনো পাওয়া যায়নি।’

ইউন আরও জানান, কিমের জন্য সময় এখন অন্যরকম। এখন মিসাইল পরীক্ষা তার এজেন্ডায় ততোটা গুরুত্ব নাও পেতে পারে, যেটা চার বছর আগে ছিলো।

ইউন বলেন, ‘তারা এখন প্রমাণ করেছে, তাদের একটি কার্যকর আইসিবিএম (আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র) আছে, যা মহাদেশীয় যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো জায়গায় আঘাত করতে পারে। তাদের একটি খুব বড় পারমাণবিক যন্ত্রও আছে যা তারা ২০১৭ সালে পরীক্ষা করেছিল।’

তবে, যুদ্ধ শুরু করার জন্য উত্তর কোরিয়ার নিজস্ব কয়েকটি চাপ আছে বলে জানান ইউন।

তিনি জানান, বিশ্বজুড়ে চলমান করোনাভাইরাস মহামারিতে কিম দাবি করেছে উত্তর কোরিয়ায় কোনো মানুষ এখনো করোনায় আক্রান্ত হননি। কিন্তু, করোনা ঠেকাতে দেশটিতে নিষেধাজ্ঞাগুলো এখনো জারি আছে। ফলে, সেখানে অর্থনীতি নিয়ে এক ধরনের টানাপড়েন চলছে। এ ছাড়াও, এ বছরের শুরুর দিকে টাইফুন ও বন্যার ক্ষতি থেকে এখনো দেশটি পুরোপুরি উঠে দাঁড়াতে পারেনি।

Comments

The Daily Star  | English

Trump says won't kill Iran's Khamenei 'for now' as Israel presses campaign

Israel says conducted 'extensive strikes' in Iran's west, while explosions near Tel Aviv, sirens blare across Israel; smoke rises after explosion in Iran’s Tabriz

1h ago