ক্ষমতা ছাড়ার আগে ইরানে হামলার পরিকল্পনায় ট্রাম্প

ক্ষমতা হস্তান্তরের দুই মাস আগে ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ইরানের নাতানজেতে প্রধান পরমাণু স্থাপনা (ডানে)। ছবি: রয়টার্স

ক্ষমতা হস্তান্তরের দুই মাস আগে ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত সপ্তাহে ওভাল অফিসের এক বৈঠকে ইরানে আক্রমণ চালানোর সুযোগ আছে কিনা এ নিয়ে আলোচনা করেছেন ট্রাম্প।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই বৈঠকে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও, নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টোফার মিলার ও জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি উপস্থিত ছিলেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসকে ওই কর্মকর্তা বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, হামলার পর ব্যাপক সংঘর্ষের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বৈঠকে ট্রাম্পকে ইরান আক্রমণের পরিকল্পনায় অগ্রসর না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘ট্রাম্প ইরানে আক্রমণ চালানোর সুযোগ আছে কিনা জানতে চেয়েছিলেন। তারা তাকে এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত এই বিষয়ে অগ্রসর না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

রয়টার্স আরও জানিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হোয়াইট হাউসে যোগাযোগ করা হলে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ক্ষমতায় আসার পর গত চার বছর ধরে ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক নীতি গ্রহণ করে চলেছেন।

২০১৮ সালে তিনি তার পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নেতৃত্বে হওয়া আলোচিত ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসেন। পাশাপাশি, ইরানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্পের ওই অনুরোধের একদিন আগেই ইরানের ইউরেনিয়াম মজুদ বাড়ানো নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের ওয়াচডগ আন্তর্জাতিক পরমাণুশক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সমঝোতা চুক্তিতে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম থাকার কথা ইরান তার চেয়ে অন্তত ১২ গুণ বেশি ইউরেনিয়াম মজুদ করেছে।

সংস্থাটির আরও জানিয়েছে, এখন ইরানের ইউরেনিয়াম মজুদের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৪৪৩ কেজি।

মূলত পরমাণু বোমা তৈরিতে ইউরেনিয়াম ব্যবহার করা হয়।

এদিকে, জাতিসংঘ মিশনের ইরানি মুখপাত্র আলিরেজা মিরোউসফি জানিয়েছেন, ইরান শান্তিপূর্ণ কাজে বেসামরিক ব্যবহারের জন্য পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।

এ বছর জানুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে একটি বিমানবন্দরের কাছে বিমান হামলা চালিয়ে ইরানের বিপ্লবী বাহিনীর প্রধান জেনারেল কাশেম সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়।

ইরানের আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পর তিনিই ছিলেন সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি।

সেই হামলার পর ইরানের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যাপক সামরিক সংঘাতে জড়াননি ট্রাম্প। এছাড়াও বিশ্বের কয়েকটি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার চেষ্টা করেছেন তিনি।

গত ৩ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচনে প্রাথমিক গণনায় জো বাইডেন বিজয়ী হলেও ট্রাম্প নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে তা গ্রহণ করেননি।

আগামী ২০ জানুয়ারি নির্বাচিত-প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাতে ট্রাম্পের ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের প্রধান পরমাণু স্থাপনা নাতানজেতে হামলা চালানো হলে তা আঞ্চলিক সংঘাতের রূপ নিতে পারে এবং জো বাইডেনের জন্য একটি গুরুতর পররাষ্ট্রনীতি চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago