আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে প্রথম বেসরকারি নভোচারীবাহী স্পেস ক্রাফট
প্রায় এক দশক ধরে চলা প্রচেষ্টার সুফল পেল নাসা-স্পেসএক্স মিশন। প্রথমবারের মতো পৃথিবী থেকে নভোচারী নিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নিরাপদে পৌঁছে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করল আমেরিকার বেসরকারি মহাকাশ ভ্রমণ প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স।
গতকাল সোমবার আমেরিকার স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে চার নভোচারীকে নিয়ে স্পেসএক্সের মহাকাশযান ‘ড্রাগন’ পৌঁছায় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে।
আজ মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাকাশযান পৌঁছানোর দুই ঘণ্টা পর নাসার মার্কিন নাগরিক মাইকেল হপকিন্স, ভিক্টর গ্লোভার ও শ্যানন ওয়াকার এবং জাপানের সইচি নগুচি ক্যাপসুল থেকে বের হয়ে আসেন। তারা এই ক্যাপসুলটির ভেতরে ৩০ ঘণ্টার বেশি অবস্থান করছিলেন।
স্টেশনে পৌঁছানোর পর ও প্রয়োজনীয় চেকআপ শেষে নতুন নভোচারীদের বরণ করে নেন মহাকাশ স্টেশনে থাকা নাসার নভোচারী কেট রুবিনস এবং রাশিয়ার নভোচারী সার্গেই রিঝিকভ ও সার্গেই কুদ ভারচকভ।
রুশ নভোচারীরা গত মাসে ‘সয়ুজ’ মহাকাশযানে চড়ে এখানে এসেছিলেন।
নতুন নভোচারীরা পৌঁছানোর পর নাসার হিউম্যান স্পেসফ্লাইট বিভাগের প্রধান ক্যাথি লুয়েডার তাদের সঙ্গে রেডিওর মাধ্যমে কুশল বিনিময় করেন।
সিএনএন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে নভোচারীদের নিয়মিত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং স্টেশনটিতে প্রয়োজনীয় নভোচারীদের পৌঁছে দেওয়ার জন্যে নাসা ও স্পেসএক্স গত এক দশক ধরে কাজ করে যাচ্ছে।
অবশেষে তাদের সেই মিশন সফল হলো আজ।
এর আগে, গত রোববার এই তিন মার্কিন ও এক জাপানি নভোচারীকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার ছেড়ে যায় ‘ড্রাগন’। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক সেখানে উপস্থিত থাকতে পারেননি।
রাশিয়ার স্পেস ক্রাফট সয়ুজ গত নয় বছর ধরে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে যাত্রী পরিবহন করছে। সফলভাবে ‘ড্রাগন’র যাত্রা সম্পন্ন হওয়ায় রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা অনেক কমবে বলে মনে করছেন নাসার কর্মকর্তারা।
ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ রাশিয়ার সয়ুজে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে যাত্রী পাঠাতে মাথাপিছু আমেরিকার খরচ হয়েছে ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আগামী ছয় মাস আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে কাজ করার কথা রয়েছে নতুন এই চার মহাকাশচারীর। এ সময়ে তারা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও স্পেস সেন্টারের বাইরে মেরামতের কাজ সম্পন্ন করবেন। তারপর স্পেসএক্সের মহাকাশযানে চড়েই তারা ফিরে আসবেন পৃথিবীতে।
তারা ফিরে আসার আগে সেখানে রেখে আসবেন তাদের উত্তরসূরী। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে আরেকটি মহাকাশচারী দল। এই চার জনের ফিরে আসার সময় হলেই নতুন এই দলটি পৌঁছে যাবেন মহাকাশে।
Comments