মিয়ানমারে সরকার গঠনের পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, মিয়ানমারে নতুন সরকার গঠনের পর প্রত্যাবাসন বিষয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু করার জন্য বাংলাদেশ যোগাযোগ করবে।
কোভিড-১৯ মহামারি এবং মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচনের কারণে প্রত্যাবাসন আলোচনা আপাতত স্থগিত রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ-চীন-মিয়ানমার নিয়ে ত্রিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার কার্যক্রমও আবার শুরু করবে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে এ ব্যবস্থায় তিনটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইনের খসড়ার ওপর মতবিনিময় সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোহিঙ্গা একটি বড় সমস্যা হয়ে গেছে। আমরা সব ফ্রন্টে যোগাযোগ রাখছি।’
ড. মোমেন বলেন যে জাপান, চীন, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো বাংলাদেশের বন্ধুরা সংকট নিরসনে মিয়ানমারের ওপর নতুন করে চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার বারবার আমাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। কিন্তু তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকার ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গা স্থানান্তর করবে, তবে এখনও এ ধরনের স্থানান্তরের কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি। ‘তারিখ ঠিক করা হলে আপনারা জানবেন।’
তিনি বলেন, মিয়ানমারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও সেখানে এখনও সরকার পুরোপুরি গঠিত হয়নি। ‘যখন সব দেশ মিয়ানমার সরকারকে (নতুন) স্বীকৃতি দেবে, আমরাও একই কাজ করব।’
করোনা মহামারিতে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবার কোভিড-১৯ সনদ বাধ্যতামূলক। ‘আমরা এ বিষয়ে কঠোর রয়েছি।’
এর আগে, মতবিনিময় সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে সিলেট মহানগরের পরিধি বাড়ানোর কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে এবং বেশ অগ্রসর হয়েছে। নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হলে পরিকল্পিতভাবে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হবে। সে কারণে এ আইন প্রণয়ন করা অত্যন্ত জরুরি।
সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। মুজিববর্ষে এ আইন প্রণয়ন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিষয়টি ত্বরান্বিত করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
ড. মোমেন বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার হলো জনগণের সরকার, তৃণমূলের সরকার। সে কারণে সবার সাথে আলোচনার মাধ্যমে এ আইন প্রণয়নের জন্য মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে।’
সভায় জানানো হয়, সিলেট মহানগরীকে আধুনিক ও আকর্ষণীয় পর্যটন নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং এ অঞ্চলের সুপরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার জন্য আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম নাহিদ, সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ কয়েস, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট চেম্বার সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব, সিলেট উইমেন চেম্বারের সভাপতি স্বর্ণলতা রায় প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
Comments