‘সরকার মিটিং আছে কইয়ে’ মানববন্ধন
বান্দরবানের আলীকদমের কয়েকটি ম্রো পাড়া থেকে প্রায় ১২০ ম্রো এবং সদরের প্রায় ১০০ জন পাহাড়ি এবং বাঙালি বান্দরবান প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন।
মানববন্ধন থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়েছে, জীবননগর চন্দ্র পাহাড়ে আর আর হোল্ডিং গ্রুপের মাধ্যমে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগকে কেন্দ্র করে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং ম্রো সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে মিডিয়ার মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
‘বান্দরবানের ম্রো সম্প্রদায়’-এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে যেসব প্ল্যাকার্ড দেখানো হয় তাতে লেখা ছিল, ‘সেনাবাহিনী সম্পর্কে অপপ্রচার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রুখে দেই’, ‘সেনাবাহিনী-ম্রো এক হয়ে সন্ত্রাসবাদ রুখে দেই’, ‘নিজেদের জীবিকা নিজে করি প্রশ্ন কেন উচ্ছেদের’।
মানববন্ধনে উপস্থিত মেনরং ম্রো দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সরকার মিটিং আছে কইয়ে (বলে) আমাদেরকে আলীকদম থেকে বান্দরবান নিয়ে আসা হয়।’
সোলেমন ম্রো নামের আরেকজন বলেন, ‘আলীকদম থেকে সকালে তিনটি বাসে করে আমাদের বান্দরবান শহরে নিয়ে আসা হয়। বলেছিল সরকারি মিটিং। কিন্তু আসার পরে জানতে পারি মানববন্ধন।’
শহরের লেমু ঝিরি আগা পাড়ার কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার চ হ্লা প্রু বলেছিলেন প্রেস ক্লাবের সামনে চাল দেওয়া হবে। গিয়ে দেখি ভিন্ন ঘটনা।
মেম্বার চ হ্লা প্রুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমাকে মানববন্ধনের ব্যাপারে কিছু বলেনি। বলা হয়েছিল চাল বিতরণ করবে। ৩০ জন লোক পাঠাতে বলেছিল। আমি পাঠিয়েছি।’
সম্প্রতি বান্দরবানের নাইতং পাহাড়ে (কারো কারো মতে চন্দ্র পাহাড়) পাঁচ তারকা হোটেল ও পর্যটন স্পট নির্মাণের জন্য সিকদার গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রায় ১০০০ একর ম্রোদের জুম ভূমি দখলের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে।
৭ অক্টোবরের ক্ষতিগ্রস্ত ম্রো গ্রামবাসীরা বান্দরবানের জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপি দেওয়ার এক মাস পর চিম্বুক পাহাড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ম্রো জনগোষ্ঠীর লোকজন নাইতং পাহাড়ে হোটেল নির্মাণ ও পর্যটনের নামে তাদের প্রাচীন জুম ভূমি রক্ষার দাবিতে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ করেছেন।
আরও পড়ুন:
বান্দরবানের পাহাড়ে সিকদার গ্রুপের হোটেল-পর্যটন কেন্দ্র, পাহাড়িদের বিক্ষোভ
চিম্বুক পাহাড়ে হোটেল নির্মাণের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে মানববন্ধন ও সমাবেশ
লাল পাহাড়ের রূপকথা ও চুপকথাদের গল্প
বাঙালির আনন্দের জন্য আর কতো পাহাড়ি উচ্ছেদ?
ম্রো ভূমিতে বিনোদন পার্ক নয়, ৬২ নাগরিকের বিবৃতি
Comments