আফগানিস্তানে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ মিলেছে অস্ট্রেলীয় বাহিনী বিরুদ্ধে
![Australian elite force Australian elite force](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/australian_elite_force.jpg?itok=tF9mYIFl×tamp=1605778309)
আফগানিস্তানে শান্তি আনতে গিয়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এলিট বাহিনী।
এই বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে ৩৯ নিরস্ত্র কারাবন্দি ও বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে বলে অস্ট্রেলিয়ার সামরিক কর্তৃপক্ষের (এডিএফ) তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চার বছর তদন্তের পর আজ বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে এডিএফ।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিনিয়র কমান্ডোরা জুনিয়র সেনাদের যুদ্ধের জন্য ‘রক্তপাত’ এর অংশ হিসেবে নিরস্ত্র বন্দিদের হত্যা করতে বাধ্য করেছিল।
ওই ৩৯ জনকে হত্যায় ঘটনায় ১৯ কর্মকর্তার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়াও ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারেও প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।
২০০৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে আফগানিস্তানে বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের কার্যক্রম সম্পর্কে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত তদন্তের বিশদ বিবরণী প্রকাশ করেন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান জেনারেল অ্যাঙ্গাস জন ক্যাম্পবেল।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ২৩টি ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ান স্পেশাল ফোর্সের ২৫ সদস্যের বিরুদ্ধে ৩৯ জনকে বেআইনিভাবে হত্যার নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া গেছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন বন্দি, কৃষক ও অন্যান্য পেশার সাধারণ মানুষ।
ক্যাম্পবেল জানিয়েছে, এই সব হত্যা ঘটনার সঙ্গে যুদ্ধের কোনো সম্পর্ক ছিল না।
তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘অনুসন্ধানে সামরিক আচরণ ও মূল্যবোধের সবচেয়ে গুরুতর লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বেসামরিক নাগরিক ও বন্দিদের বেআইনিভাবে হত্যা কখনও গ্রহণযোগ্য নয়।’
তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী ক্যাম্পবেল জানিয়েছেন, বিচারকাজ শুরুর জন্য যথেষ্ট প্রমাণ আছে কিনা তা যাচাই করতে অভিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার সামরিক বাহিনীর ১৯ বর্তমান ও সাবেক সদস্যকে শিগগিরই বিশেষ তদন্তকারীর কাছে পাঠানো হবে।
চার বছরের এই তদন্ত পরিচালনা করেন নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের বিচারক পল ব্রেইটেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, তদন্তে ২০ হাজারেরও বেশি নথি ও ২৫ হাজার ছবি যাচাই করা হয়েছে এবং ৪২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষাত্কার নেওয়া হয়েছে।
আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের কথোপকথনের পর এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
এক টুইটে আশরাফ গনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী কয়েকজন অস্ট্রেলিয়ান সেনা কর্তৃক আফগানিস্তানে সংঘটিত অপরাধের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।’
মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের তালেবান যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে ২০০২ সাল থেকে আফগানিস্তানে অস্ট্রেলিয়ার সেনা মোতায়েন রয়েছে।
দেশটিতে বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার অস্ট্রেলিয়ান সেনা রয়েছে।
Comments