নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্পের মজা কিংবা সংকট!

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল মেনে না নেওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এক ধরনের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় আছে। নির্বাচন নিয়ে তার ভিত্তিহীন জালিয়াতির অভিযোগ, মামলা, টুইট করে নিজের জয়ের বাণী প্রচার- এসবের গুরুত্ব কতটুকু কিংবা নিতান্তই মজা করে তিনি এসব করছেন?
TRUMP.jpg
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল মেনে না নেওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এক ধরনের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় আছে। নির্বাচন নিয়ে তার ভিত্তিহীন জালিয়াতির অভিযোগ, মামলা, টুইট করে নিজের জয়ের বাণী প্রচার- এসবের গুরুত্ব কতটুকু কিংবা নিতান্তই মজা করে তিনি এসব করছেন?

জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকার করে না নেওয়া পর্যন্ত সব কিছুকেই একটি ‘হতাশাপূর্ণ কৌতুক’ বলে সিএনএন’র একটি বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনে  উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে, মামলাগুলোর একটি প্রভাব আছেই। ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়ায় নির্বাচন নিয়ে তার সমর্থকদের মনে সন্দেহের বীজ তৈরি হয়েছে এবং ক্রমশ তা দৃঢ় হচ্ছে।

মিশিগানে রিপাবলিকান কর্মকর্তারা ট্রাম্পের বাস্তবতার সঙ্গে একমত হয়েছেন এবং ডেট্রয়েটের নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যয়ন প্রত্যাহার করতে চেয়েছেন। ট্রাম্প রাজ্যের আইনজীবীদের শুক্রবার হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

ট্রাম্প রিপাবলিকান কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং তারা জানিয়েছেন যে, তারা ওয়েইন কাউন্টিতে ভোট প্রত্যয়ন প্রত্যাহার করবেন।

ট্রাম্পের অ্যাটর্নি রুডি গিউলিয়ানি এসবের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। গতকাল বিকালে তিনি একটি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। সেখানে তিনি নির্বাচন চুরির গভীর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেন। প্রমাণ হিসেবে তিনি ফিলাডেলফিয়ার ভোটের দিকে ইঙ্গিত করেন।

সম্প্রতি বহিষ্কৃত নির্বাচন সিকিউরিটি কর্মকর্তা ক্রিস ক্রেবস এক টুইটে একে মার্কিন ইতিহাসের ‘সবচেয়ে ভয়ঙ্কর’ এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের সংবাদ সম্মেলন বলে উল্লেখ করেন।

তবে, এ ষড়যন্ত্র কমপক্ষে তিনটি রাজ্যের ফলাফল পাল্টে দিয়ে নির্বাচনে পরাজয় প্রত্যাখ্যান করার একটা বিস্তৃত প্রচেষ্টা। ট্রাম্পকে ক্ষমতায় রাখতে ভোটারদের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করা একইসঙ্গে দুঃখজনক ও হাস্যকর।

২০১৬ সালে ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে, বিষয়টিকে হাস্যকর বলে মনে হচ্ছিল। তবে, মিডিয়া ও রিপাবলিকান দলের সবাইকে অবাক করে দিয়ে তার হোয়াইট হাউজের দায়িত্ব নেওয়ার পর, সবাই এর পেছনে ষড়যন্ত্র তত্ত্বই দেখেছেন।

এবার অবশ্য ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে থেকে যাওয়া অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে। ভোটাররা তাকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন দেশব্যাপী তার থেকে ৬০ লাখেরও বেশি ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনের পর ট্রাম্পের আইনি চ্যালেঞ্জগুলোও একে একে বাতিল হচ্ছে। ভোট পুনর্গণনাতেও ফলাফল হেরফের হওয়ার তেমন সুযোগ নেই।

তবে, নির্বাচনের পর বিভিন্ন জায়গায় উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। যেমন, জেপি মরগান অ্যাসেট বিনিয়োগকারীদের জন্য দুঃসংবাদ জানিয়েছে। ওয়াল স্ট্রিটের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই নির্বাচনের ফলাফলকে পাল্টে দিতে ট্রাম্পের এ ধরনের প্রচারণার প্রয়াসকে মরণকামড় হিসেবে দেখছে।

পরিস্থিতি এক ধরনের বিশৃঙ্খলার দিকে যাচ্ছে বলে জেপি মরগান তার ক্লায়েন্টদের জানিয়েছে।

জেপি মরগান অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের বাজার ও বিনিয়োগ স্ট্র্যাটেজির চেয়ারম্যান মাইকেল স্যাম্বালেস্ট বুধবার একটি প্রতিবেদনে একে যুক্তরাষ্ট্রের ‘পরবর্তী ভয়ঙ্কর ঝুঁকি’ এবং ‘সাংবিধানিক বিশৃঙ্খলা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

Comments