শেষ ওভারের নাটকীয়তায় নায়ক থেকে খলনায়ক মুক্তার

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সজীব উইকেটে শেখ মেহেদী হাসান আর নুরুল হাসানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছিল মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। তবু লক্ষ্যটা ছিল বেক্সিমকো ঢাকার নাগালেই। রান তাড়ায় শুরুতেই বিপাকে পড়া দলকে ঠিক পথেও রেখেছিলেন মুশফিকুর রহিম আর আকবর আলি। কিন্তু কাজটা শেষ করতে পারেননি তারা। শেষ দিকে মুক্তার আলি ঝড় তুলে খেলা নিয়ে এসেছিলেন হাতে। পরে অবশ্য তিনিই হয়েছেন খলনায়ক।

শেষ দুই ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ৩০ রান। ফরহাদ রেজার ১৯তম ওভারে তিন ছয়ে ২১ রান তুলে ফেলেন আগে বল হাতে আলো ছড়ানো মুক্তার। শেষ ওভারে দরকার দাঁড়ায় কেবল ৯ রান। শেখ মেহেদীর ওভারে ওই রানও নিতে পারেননি মুক্তার। কাজে লাগাতে পারেননি ফ্রি-হিটের সুযোগও। সবমিলিয়ে মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম ম্যাচেই ছড়িয়েছে তীব্র রোমাঞ্চ। তাতে ২ রানে জিতেছে নামে-ভারে পিছিয়ে থাকা রাজশাহী।

আগে ব্যাট করা রাজশাহী করেছিল ৯ উইকেটে ১৬৯। পুরো ওভার খেলে মাত্র ৫ উইকেট হারালেও ঢাকা থেমে যায় ১৬৭ রানে। রাজশাহীর জয়ে বড় অবদান শেখ মেহেদীর। ৩২ বলে ৫০ করার পর ৪ ওভার বল করে মাত্র ২২ রানে নেন ১ উইকেট। এর মধ্যে শেষ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে নায়ক বনেছেন তিনি।

akbar ali and mushfiq
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

১৭০ রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি ঢাকার। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় আগ্রাসী ব্যাট করছিলেন। কিন্তু তার ঝড় তোলার সম্ভাবনা নিভেছে রান আউটে। আরেক প্রান্তে নামা ইয়াসির আলি নড়বড়ে খেলে ফেরেন এলবিডব্লিউ হয়ে।

তিনে নামা নাঈম শেখ থিতু হয়ে গিয়েছিলেন। ২ চার ২ ছক্কায় তার ২৬ রানের ইনিংস ফুরোয় আরাফাত সানির বলে। ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারানো দলটি চাপ সামলে পথে ফেরে মুশফিক ও আকবরের ব্যাটে। পরিস্থিতি সামলে দুজনে খেলা নিয়ে আসেন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের জুটিতে সমীকরণ হয়ে আসছিল সহজ।

তবে ৫৩ বলে তাদের ৭১ রানের জুটি ভেঙ্গে দেন ফরহাদ। মিড উইকেট দিয়ে উড়াতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন আকবর। দলকে হতাশায় ডুবিয়ে খানিক পর বিদায় হয় মুশফিকেরও। ইবাদত হোসেনের বলে স্কুপ খেলতে গিয়ে ৪১ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে দেন তিনি।

ম্যাচে তখন অনেকটা ব্যাকফুটে চলে যায় ঢাকা। তবে সাব্বির রহমানকে এক পাশে রেখে খেলা মুঠোয় নিয়ে এসেছিলেন মুক্তার। শেষ পর্যন্ত তার ১৬ বলে ২৭ রানের ইনিংস কেবল আক্ষেপই বাড়িয়েছে দলের। মেহেদীর শেষ ওভারে ৪টি ডট বল খেলে নায়ক হওয়ার সম্ভাবনা জলাঞ্জলি দিয়ে খলনায়কে পরিণত হন তিনি।

sheikh mahedi hasan
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা রাজশাহী দিয়েছিল বড় রানের আভাস। ওপেনারদের জুতসই শুরুর পর তা এলোমেলো হয়ে যায় মিডল অর্ডারে। পরে শেখ মেহেদী আর নুরুলের জুটিতে খেলায় ফেরে রাজশাহী। ষষ্ঠ উইকেটে ৫১ বলে দুজনের ৮৯ রানের জুটিতে প্রাণ ফেরে ম্যাচে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী: ২০ ওভারে ১৬৯/৯ (শান্ত ১৭, ইমন ৩৫, রনি ৬, আশরাফুল ৫, ফজলে মাহমুদ ০, নুরুল ৩৯, শেখ মেহেদী ৫০, ফরহাদ ১১*, আরাফাত ০, মুগ্ধ ০, ইবাদত ০*; রুবেল ০/২৯, মেহেদী রানা ১/৩১, নাসুম ১/৪১, মুক্তার ৩/২২, নাঈম ১/৩২, সাব্বির ০/১১)

বেক্সিমকো ঢাকা: ২০ ওভারে ১৬৭/৫ (তানজিদ ১৮, ইয়াসির ৯, নাঈম ২৬, মুশফিক ৪১, আকবর ৩৪, সাব্বির ৫*, মুক্তার ২৭*; শেখ মেহেদী ১/২২, ইবাদত ১/৩৬, মুকিদুল ০/৩৫, আরাফাত ১/৩৮, ফরহাদ ১/৩৩)

ফল: মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী ২ রানে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago