‘ফুটবল ঈশ্বর’ হারিয়ে নেপলসের রাস্তায় কান্নার মিছিল

neopolis crying for Maradona
ছবি: রয়টার্স

৬০ বছর বয়সে চিরবিদায় নেওয়া দিয়েগো ম্যারাডোনার শোকে কাঁদছে পুরো বিশ্ব। তবে নেপলসবাসীদের এই সীমাহীন কষ্ট অনুভব করতে হচ্ছে দ্বিতীয়বারের মতো। আগেও একবার তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন ‘ফুটবল ঈশ্বর’ খ্যাত আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। একই প্রিয়জনকে দুবার হারানোর দুঃখটা কেমন তারাই হয়তো কেবল বলতে পারবে!

নেপলস শহরের ক্লাব নাপোলি ম্যারাডোনা ছেড়েছিলেন ১৯৯২ সালে। তবে দলটির হয়ে তার শেষবার মাঠে নামার ঘটনা আরও আগের। কারণ, নিষিদ্ধ শক্তিবর্ধক মাদক গ্রহণের দায়ে তাকে ১৫ মাসের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।

সেসময়ের রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে নাপোলিতে যোগ দেওয়ার আগে-পরে বোকা জুনিয়র্স ও বার্সেলোনার মতো দলেও খেলেছেন ম্যারাডোনা। কিন্তু তার সবকিছু উজাড় করে দিয়েছিলেন ইতালিয়ান দলটির জন্য।

নাপোলিতে সাত মৌসুম খেলে দুটি সিরি আ ও একটি উয়েফা কাপসহ পাঁচটি শিরোপা জিতেছিলেন ম্যারাডোনা। তার চেয়ে বরং বলা উচিত, ম্যারাডোনার একক নৈপুণ্যে জিতেছিল নাপোলি। প্রায় তিন যুগ পেরিয়ে গেলেও সেই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারেনি দলটি। সেকারণে জাতীয় দলের হয়ে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জেতা ম্যারডোনা যতটা আর্জেন্টিনার, ততটাই নাপোলির।

ম্যারাডোনার মহাপ্রয়াণে নেপলসে তাই বিষাদের ছায়া। তীব্র হাহাকার শহরবাসীর হৃদয়জুড়ে। বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় খবর ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে সমস্বরে বেজে ওঠে গির্জার ঘণ্টাগুলো। রাস্তায় বেরিয়ে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করেন ম্যারাডোনার পায়ের জাদুতে মোহাবিষ্ট হওয়া বাসিন্দারা। সান্ত্বনাও দেন একে অপরকে।

neopolis crying for Maradona

কিন্তু এই শোক কী করে কাটিয়ে উঠবে নেপলসবাসীরা? তারা তো ম্যারাডোনাকে নিজেদের শহরের শ্রেষ্ঠ প্রতীক হিসেবে মেনে থাকে তারা। সেই শহর, যার দেয়ালে দেয়ালে তাকে নিয়ে ম্যুরাল, গ্রাফিতিসহ আরও কত কী আঁকা তাকে নিয়ে! ম্যারাডোনা তো তাদের প্রিয় ক্লাবের হয়ে খেলতে আসা একজন ফুটবলার কেবল নন, তাদের জীবনের অংশ-জীবনযাত্রার অংশ।

অসাধারণ প্রতিভা ও দক্ষতাসম্পন্ন ম্যারাডোনার জীবনে বিতর্ক ছিল নিত্যসঙ্গী। নাপোলি থাকা অবস্থায়ও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। সেসময় তার আইনজীবীদের মধ্যে একজন ছিলেন অ্যাঞ্জেলো পিসানি। ম্যারাডোনার মৃত্যু নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি।

স্পোর্টসমেইলকে তিনি বলেছেন, ‘কেবল আমার ও নাপোলির জন্য নয়, ফুটবল অনুরাগী প্রতিটি মানুষের জন্য এটা সবচেয়ে কঠিন মুহূর্ত। ম্যারাডোনা ছিলেন এই শহরের (নাপোলি) আলো। তিনি ছিলেন বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। আমি আজ ভীষণভাবে দুঃখিত। এই ২০২০ সাল বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটির জীবন কেড়ে নিল।’

ম্যারাডোনা বাকিদের জন্য হয়তো ছিলেন কিংবদন্তি, তবে নেপলসবাসীদের কাছে তিনি ‘ঈশ্বর’।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago