টিলা কেটে সরকারি স্কুল ভবন, প্রমাণ পেল পরিবেশ অধিদপ্তর
মৌলভীবাজারে টিলা কেটে সরকারি স্কুল ভবন নির্মাণের সত্যতা পেয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের ইছাছড়া এলাকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
বুধবার পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের সহকারী পরিচালক মো. বদরুল হুদা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরেজমিন পরিদর্শনকালে ইছাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রস্তাবিত ভবনের নির্মাণ কাজে পশ্চিম অংশের উঁচু ভূমির অংশবিশেষ কাটার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এটা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।'
তিনি বলেন, 'উঁচু ভূমির ওই অংশ কাঁটার ফলে বিদ্যমান টিলা ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।'
গত ২২ নভেম্বর দ্য ডেইলি স্টার 'টিলা কেটে সরকারি স্কুলের ভবন নির্মাণের কাজ চলছে' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পরিদর্শনকালে ইছাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ আব্দুল বাছিত, ইছাছড়া খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যান জেনেরাল ধার ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম এর নারী বিষয়ক সম্পাদক ফ্লোরা বাবলী তালাং উপস্থিত ছিলেন। তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক দলকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন।
জেনেরাল ধার পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের জানান, তাদের পূর্বপুরুষদের জমি স্কুলকে দেওয়া হয়েছে। পুঞ্জির খেলার মাঠে নতুন ভবন নির্মাণ করা হলে বহুবিধ সমস্যা দেখা দিবে।
তিনি জানান, এই মাঠে ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়ে আসছিল।
স্কুল কমিটির সভাপতি সৈয়দ আব্দুল বাছিত জানান, মাঠটি স্কুলের নামে রেকর্ডভূক্ত। স্কুলের ভবন নির্মাণের জন্য জায়গাটি গর্ত করা হয়েছে। ভিত্তি নির্মাণের কাজ শেষ হলে গর্ত ভরাট করে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল করিম চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টিলার কিছু অংশ কেটে ও মাঠকে সংকুচিত করে স্কুলের নতুন ভবন নির্মান করা হলে পুঞ্জিবাসী এই মাঠ হারাবে। অন্যদিকে, টিলা কাটার কারণে যে কোন সময় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটতে পারে।'
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে এই প্রতিবেদককে বলেন, 'আমরা পাহাড়-টিলার গুরুত্ব বুঝি না। আমরা পুকুর জলাশয়ের গুরুত্ব বুঝি না। আমরা খেলার মাঠের প্রয়োজন বুঝি না। আমরা কেবল দখল বুঝি, ভরাট বুঝি, কাটাকাটি বুঝি।'
আরও পড়ুন--
Comments