শান্তর ব্যাটে পাত্তা পেলেন না সাকিব-মাহমুদউল্লাহরাও
প্রতিপক্ষ দলে সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহদের মতো বড় নাম। স্বাভাবিকভাবেই ফেভারিট ছিল তারা। অন্যদিকে তরুণদের নিয়ে অনভিজ্ঞ দল মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। তবে সে তরুণরাই বাজিমাত করেছে। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দারুণ ফিফটিতে ভর টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে দলটি। ফলে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের শীর্ষে রইল তারাই।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার জেমকন খুলনাকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। আগের ম্যাচে আসরের আরেক ফেভারিট বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়েছিল দলটি।
এদিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যক্তিগত ২ রানেই আউট হন আনিসুল ইসলাম ইমন। তবে অপর প্রান্তে দারুণ ব্যাট করতে থাকেন শান্ত। পাকিস্তান সফরে সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর থেকেই এ সংস্করণে দারুণ ছন্দে আছেন তিনি। এদিনও তুলে নিয়েছেন হাফসেঞ্চুরি। দ্বিতীয় উইকেটে রনি তালুকদারকে নিয়ে তার করা ৪৭ রানের জুটিতেই জয়ের ভিত পায় দলটি।
এরপর অবশ্য ১৫ রানের ব্যবধানে এ দুই ব্যাটসম্যানকে তুলে ম্যাচে ফিরেছিল খুলনা। তবে এরপর ফজলে রাব্বির ১৬ বলে ২৪ রানের ইনিংসে ফের কোণঠাসা হয়ে পড়ে দলটি। রাব্বিকে ফেরাতে পারলেও বাকি কাজটা নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে শেষ করেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ আশরাফুল। ১৬ বল বাকি থাকতেই জয় পায় রাজশাহী।
৩৪ বলে ৫৫ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেন শান্ত। ৩৪ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২০ বলে ২৬ রান করেন রনি। শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন আশরাফুল। ১৭ বলে ৩টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন জেমকন খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু ব্যাট হাতে তাদের শুরুটা ভালো হয়নি। নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে দলটি। এদিনও খালি হাতে মাঠ ছাড়েন ওপেনার ইমরুল কায়েস। খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি নিষেধাজ্ঞা থেকে আগের ম্যাচে ফেরা সাকিব আল হাসানও। মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর বলে পুল করতে গিয়ে ধরা পড়েন ফরহাদ রেজার হাতে।
দায়িত্বটা এরপর ছিল আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর হাতে। তবে বিজয়কে দারুণ এক থ্রোতে আউট করেন মেহেদী হাসান। এরপর মাত্র ৬ রানের ব্যবধানে আরও দুইটি উইকেট হারালে বড় বিপর্যয়ে খুলনা। এরমধ্যে ছিলেন অধিনায়কও। আরাফাত সানির বল ঠিকভাবে খেলতে না পারায় বোলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি।
তখন শঙ্কা ছিল একশ রানের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার। সেখান থেকে দলকে টেনে আনেন আরিফুল। সঙ্গী হিসেবে অবশ্য পেয়েছিলেন শামিম পাটোয়ারিকে। তবে মূল কাজটা করেছেন আরিফুলই। এ দুই ব্যাটসম্যান স্কোরবোর্ডে ৪৪ রান যোগ করেন। এরপর ইবাদত হোসেনের বলে আপার কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন শামিম। পরে শহিদুল হোসেনকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৪৬ রানের জুটি গড়ে দলকে সম্মানজনক স্কোর এনে দেন আরিফুল।
শেষ পর্যন্ত উইকেটে থেকে এদিন ৪১ রান করেন আরিফুল। ৩১ বলের ইনিংসে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কার মার। দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন শামিমও। ২৫ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় করেন ৩৫ রান। শেষ দিকে শহিদুল কার্যকরী ১৭ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। এছাড়া ২৬ রান করেন এনামুল হক বিজয়। রাজশাহীর পক্ষে ৪৪ রানের খরচায় দুটি উইকেট নিয়েছেন মুগ্ধ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জেমকন খুলনা: ২০ ওভারে ১৪৬/৬ (বিজয় ২৬, ইমরুল ০, সাকিব ১২, মাহমুদউল্লাহ ৭, জহুরুল ১, আরিফুল ৪১*, শামিম ৩৫, শাহিদুল ১৭*; ইবাদত ১/২৭, মেহেদী ১/২৩, মুগ্ধ ২/৪৪, সানি ১/১৭, রেজা ০/২৯, ইমন ০/৫)।
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী: ১৭.২ ওভারে ১৪৭/৪ (শান্ত ৫৫, ইমন ২, রনি ২৬, আশরাফুল ২৫*, ফজলে ২৪, সোহান ১১*; সাকিব ০/২৭ শফিউল ০/২৪, আল-আমিন ১/১৩, শহিদুল ৩/২৭, মাহমুদউল্লাহ ০/১১, রিশাদ ২/৩৪, শামিম ০/৪)
ফলাফল: মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাজমুল হোসেন শান্ত (মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী)।
Comments