‘হামাক অ্যাকনা কম্বল দিবেন, হামরা জারোত বাঁচোং না’

‘হামাক অ্যাকনা কম্বল দিবেন, হামরা জারোত বাঁচোং না’। শীত থেকে বাঁচতে এভাবেই একটি গরম কাপড়ের চাহিদার কথা জানাচ্ছিলেন মফিয়া বেওয়া (৫২)।
ঠাণ্ডার কারণে বিপাকে পড়েছেন নদী তীরবর্তী গ্রাম ও চরাঞ্চলের মানুষ। ছবি: স্টার

‘হামাক অ্যাকনা কম্বল দিবেন, হামরা জারোত বাঁচোং না’। শীত থেকে বাঁচতে এভাবেই একটি গরম কাপড়ের চাহিদার কথা জানাচ্ছিলেন মফিয়া বেওয়া (৫২)।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের বনগ্রাম এলাকায় ধরলা নদীর তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মফিয়া বেওয়া বলেন, ‘হামার টাকা পাইসা নাই, হামার কম্বল কিনবার সাধ্য নাই। হামাব জার থাকি বাঁচান।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে তিনি বলেন, ‘হামরা নদী ভাঙা মানুষ। নদীত শোকগুলা জমি, বাস্তুভিটা চলি গ্যাইছে।’

একই গ্রামের নদী ভাঙা মজনু মিয়া (৬৪) জানান, শীতকালে তাদের বিপদ বেড়ে যায়। ঠাণ্ডার কারণে ঘর থেকে বের হতে পারেন না। কাজ কর্ম ঠিকঠাক করতে পারেন না। পরিবারে কারো শীতের কাপড় না থাকায় তাদেরকে ঠাণ্ডায় কাবু হতে হয়।

‘মাইনসের সাহায্য ছাড়া হামারগুলার কম্বল কিনবার সাধ্য নাই। মাইনসে যদি হামাক কম্বল না দ্যায় তাকহইলে হামাকগুলাক জারোত মরা নাইগবে,’ তিনি বলেন।

‘জার পরি গেইছে। এ্যালাং হামাক কাইও এ্যাকনা কম্বলও দেইল না। হামরা তো জারোত কাঁইপপার নাইগছোং,’ বলছিলেন বাঁধে আশ্রয় নেওয়া নদী ভাঙা সহিরা বেওয়া (৬৪)।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রামের এই শীতার্ত নারী আরও জানান, ঠাণ্ডার কারণে তিনি নামাজ ঠিক মতো পড়তে পারছেন না। পরিবারের সামর্থ্যও নেই যে বাজার থেকে কম্বল কিনে আনবে।

ঠাণ্ডার কারণে বিপাকে পড়েছেন নদী তীরবর্তী গ্রাম ও চরাঞ্চলের মানুষ। বন্যা ও নদীভাঙনে নিঃস্ব হয়ে সরকারি খাস জমি, রাস্তা ও বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলো পড়েছেন বিপাকে। অসহায় মানুষগুলো শীত আসলে তাকিয়ে থাকেন সরকারি অথবা বেসরকারি সহায়তার ওপর।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ধরলা নদী তীরবর্তী কুলাঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী জানান, শীতার্ত মানুষ তার কাছে কম্বলের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। সরকারিভাবে শীত বস্ত্র বিতরণ এখনো শুরু হয়নি। উপজেলা প্রশাসনকে চাহিদা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মশিউর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সরকারি বরাদ্দ এখনো তাদের কাছে আসেনি। বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শীত বস্ত্র বিতরণ শুরু করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago