ম্যারাডোনার স্পোর্টসম্যানশিপ নিয়ে আজও প্রশ্ন ইংল্যান্ডের সেই গোলরক্ষকের
দিয়েগো ম্যারাডোনার এক কাণ্ডেই তার নাম ঢুকে গেছে ইতিহাসে। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিটার শিলটনকে না হলে কে মনে রাখত! ম্যারাডোনার তুমুল আলোচিত ‘হ্যান্ড অব গড’ গোল যে জালে জড়িয়েছিল তাকে ফাঁকি দিয়েই। হাত দিয়ে করা সেই গোলের কারণে আজও ম্যারাডোনাকে ক্ষমা করতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন- ‘এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর’
বুধবার ম্যারাডোনার মৃত্যুর খবর স্পর্শ করেছে ৭১ বছর বয়েসী শিলটনকে। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ডেইলি মেইলে শোক জানাতে গিয়ে লিখেছেন কলাম। তবে তাতে বড় অংশেই উঠে এসেছে ম্যারাডোনার স্পোর্টসম্যানশিপের প্রশ্ন।
সেবার মেক্সিকোতে কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যারাডোনার দুনিয়া কাঁপানো দুই গোলে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিতে উঠে আর্জেন্টিনা। ৫১ মিনিটে করা প্রথম গোলটি ছিল লাফিয়ে উঠে করা হাতের পাঞ্চে। যা চোখ এড়িয়ে যায় রেফারি ও দুই লাইন্সম্যানের। না হলে ইচ্ছাকৃত হ্যান্ডবলের কারণে লাল কার্ড পেতে পারতেন তিনি।
আরও পড়ুন- বন্ধু ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যু দিনেই বিদায় নিলেন ‘ফুটবলের চে’
শিলটন লিখেছেন ম্যারাডোনা সেদিন পরিষ্কার প্রতারণা করেছিলেন, ‘অনেক বছর এই গোলের ক্ষত আমাকে পুড়িয়েছে। আমি মিথ্যা বলতে পারব না। লোকে বলে আমি বলটা ক্লিয়ার করতে পারতাম কিন্তু খাটো লোককে লাফাতে দিয়েছি। এটা বাজে কথা। সে পাঞ্চ না করলে হেড করতে পারত কি? অবশ্য না।’
‘কেউই আশা করেনি কি হতে যাচ্ছে। সে লাফিয়ে উঠে আমাকে চ্যালেঞ্জ করল কিন্তু মাথা লাগালো না, হাত দিয়ে পাঞ্চ করে দিল। এটা পরিষ্কার অন্যায়, প্রতারণা।’
আরও পড়ুন- ‘ফুটবল ঈশ্বর’ হারিয়ে নেপলসের রাস্তায় কান্নার মিছিল
এই গোল নিয়ে পরে হওয়া বিতর্ক ব্রিটিশ মিডিয়া চেপে ধরে ম্যারাডোনাকে। তিনি তখন তা ‘ঈশ্বরের হাত’ বলে তকমা দেন। শিলটনের আক্ষেপ ধোঁকা দিয়ে গোল করেও কখনো অনুতপ্ত হননি ম্যারাডোনা, যার কারণে ম্যারাডোনার স্পোর্টসম্যানশিপকে এখনো প্রশ্নের মুখে তুলেন তিনি, ‘যেটা আমার ভালো লাগেনি সেটা হচ্ছে এই জন্য সে কখনো মাফ চায়নি। কোন জায়গাতেই বলেনি সে প্রতারণার জন্য দুঃখিত। এর বদলে সে ‘ঈশ্বরের হাত’ শব্দটি ব্যবহার করেছে।’
‘তার গ্রেটনেস ছিল কিন্তু দুঃখজনকভাবে স্পোর্টসম্যানশিপ ছিল না।’
তবে ৫৫ মিনিটে করা ম্যারাডোনার দ্বিতীয় গোল নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। আছে বিস্ময় আর মুগ্ধতা। মাঝমাঠ থেকে কয়েকজনকে কাটিয়ে করা গোল অনেকের মতে শতাব্দী সেরা। শিলটন অবশ্য মনে করেন প্রথম গোলটি না হলে দ্বিতীয় গোলটিও আসত না, ‘দ্বিতীয় গোলটি দুর্দান্ত। তবে আমি মনে করি প্রথম গোলটি না হলে দ্বিতীয় গোলটি আসত না।’
Comments