আ. লীগের প্রার্থী মনোনয়ন বৈঠক বর্জন করলেন চার মেয়র প্রার্থী
গাজীপুরের শ্রীপুরে আওয়ামী লীগের মেয়র পদে প্রার্থী মনোনয়নে ভোট পদ্ধতি প্রত্যাখ্যান করে বৈঠক বর্জন করেছেন চার প্রার্থী। অপূর্ণাঙ্গ কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ হিসেবে চালিয়ে দেওয়া, দলীয় গঠনতন্ত্র বিরোধী কমিটি গঠনসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন তারা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বৈঠক শেষে ভোট অনুষ্ঠিত হয়।
পৌর নির্বাচন উপলক্ষে শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম মোল্লার সঞ্চালনায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, আসন্ন শ্রীপুর পৌরসভা নির্বাচনে দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগ এ বৈঠকের আহ্বান করে।
শ্রীপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র আনিছুর রহমানসহ সাত জন প্রার্থী এই বৈঠকে অংশ নেন। প্রার্থীরা ছাড়াও শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য এবং নয়টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
রাত ৮টার দিকে ঘোষিত ফলাফল থেকে জানা যায়, প্রথম হয়েছেন বর্তমান মেয়র আনিছুর রহমান, দ্বিতীয় হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাসুদ আলম, তৃতীয় হয়েছেন সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিজানুর রহমান খানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন খান।
এই নামগুলো দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে চূড়ান্ত মনোনয়নের জন্য পাঠানো হবে জানিয়ে শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম মোল্লা বলেন, ‘যারা ভোট প্রত্যাখ্যান করেছেন, তারা পরাজয়ের আশঙ্কাতেই করেছেন।’
সূত্র জানায়, বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ভোটের পক্ষে মত দেন। এক পর্যায়ে চার জন প্রার্থী নানা অভিযোগ তুলে ভোটের সিদ্ধান্ত বর্জন করে বৈঠক প্রত্যাখ্যান করেন।
তারা হলেন, শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি আহসান উল্লাহ, শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম মণ্ডল বুলবুল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আওয়ামী যুবলীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট হারুন অর রশীদ ফরিদ এবং গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম রবিন।
বৈঠক বর্জন করা প্রার্থীরা জানান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেরাই প্রার্থী হয়ে এ রকম বৈঠক আহ্বান করা দলীয় বিধির পরিপন্থী। পৌর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি কবে কোথায় গঠন করা হয়েছে তা কেউ জানে না। অথচ দলীয় পরিচিতি নেই এমন কর্মীদের বিভিন্ন পদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে বৈঠকে।
বৈঠক বর্জন করা প্রার্থীরা সব প্রার্থীর নাম দলীয় সভানেত্রীর কাছে প্রস্তাব হিসেবে পাঠানোর দাবি জানিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান।
বৈঠক বর্জন করা প্রার্থী আহসান উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশকে বাদ দিয়ে ওয়ার্ড ও পৌর আওয়ামী লীগের অপূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোনো কমিটিই পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এসব কমিটি পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, একটি অংশের স্বার্থে এবং ভাড়া করা লোক দিয়ে গঠন করা হয়েছে।’
এসব বিষয়ে শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, বৈঠকের আগেই তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন।
কমিটি গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি কমিটি দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নেতা-কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সম্মেলনের মাধ্যমে করা হয়েছে। কোনো ভাড়া করা বা বহিরাগত কেউ কমিটিতে নেই।’
Comments