সহজ লক্ষ্য তাড়ায় লিটনের নান্দনিক ব্যাটিং

রান তাড়ায় চোখ জুড়ানো কিছু শট খেলে আনন্দ দিয়েছেন লিটন দাস।
Litton Das
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

লক্ষ্যটা কেবল ৮৭ রানের। বিস্ময়কর কিছু না ঘটলে এমন ম্যাচে ফল খুবই অনুমেয়। হয়েছেও সেটাই। তবে এরমধ্যেই রান তাড়ায় চোখ জুড়ানো কিছু শট খেলে আনন্দ দিয়েছেন লিটন দাস।

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম পেয়েছে বড় জয়। আগের ম্যাচে বেক্সিমকো ঢাকাকে ৮৮ রানে আটকে ৯ উইকেটে জিতেছিল তারা। এবার জেমকন খুলনাকে ৮৬ রানে আটকে জিতল একই ব্যবধানে।

রান তাড়ায় নেমে ঠিক আগের ম্যাচের পুনরাবৃত্তিই করতে থাকেন লিটন-সৌম্য। সেদিন বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে ছোট লক্ষ্য পেরুতে এই দুজনের ব্যাটেই দল চলে গিয়েছিল জয়ের কিনারে। সহজ দায়িত্ব পেয়ে ফের দুজনেই খেললেন স্বচ্ছন্দে।

ছোট্ট লক্ষ্যের মধ্যেও দিলেন নিজেদের ছন্দে থাকার বার্তা, দেখালেন উইকেটে কোনো জুজু তো নেই, বরং রানে ভরা এই বাইশ গজে বড় লক্ষ্যে পেলেই বরং বিস্ফোরক কিছু করার জায়গা পেতেন তারা। আগের দিন সৌম্য ছিলেন বেশি আগ্রাসী, লিটন খেলেন এক পাশ ধরে। শেষ দিকে আউট হয়েছিলেন লিটন। এদিন বদলালো ভূমিকা। লিটন খেললেন আক্রমণাত্মক। ৭৩ রানের জুটির পর  সৌম্য ফিরলেও লিটন শেষ করে আসেন খেলা। ৪২ বলে ফিফটি তোলার পর  অপরাজিত থাকেন ৫৩ রানে।

তবে আগ্রাসী হতে গিয়ে একবারও তেড়েফুঁড়ে মারতে হয়নি লিটনকে।  ব্যাট-বলের সংযোগে চোখকে আরাম দিয়ে খেলেছেন দারুণ সব ক্রিকেটীয় শট।  হাসান মাহমুদের ওভারে পুল, স্কয়ার কাট, ব্যাকফুট ড্রাইভের নান্দনিক পসরা মেলে টানা চার মারেন লিটন দাস। সাকিব বাউন্ডারিতে পাঠান কাভার ড্রাইভ আর ইনসাইড আউটে। ইনিংসে এভাবে মেরেছেন ৯ চার।

সৌম্য যোগ্য সঙ্গত দিতে দিতেও বের করেছেন বাউন্ডারি। মাঠে দাঁড়িয়ে নিশ্চিত হার সহ্য করা ছাড়া যেন কিছুই করার ছিল না মাহমুদউল্লাহদের। সৌম্য ২৬ রান করে পরে মাহমুদউল্লাহর শিকার হয়েছেন। তবে খেলায় তখন অনেকটা শেষের সুরই বাজছে। মুমিনুলকে নিয়ে বাকি কাজ দ্রুতই সেরে ফেলেন লিটন।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে যেন বেশ অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়েছিল খুলনা। শুরু থেকেই তাদের দেখা গেছে জড়সড়ো। তিন থেকে ওপেনিংয়ে উঠে এসেও ফল ফেরাতে পারেননি সাকিব। লম্বা সময়ে না খেলার ছাপ রেখে ক্যাচ দেন ৭ বলে ৩ রান করে। তার আগে এনামুল হক বিজয়ের রান আউটেও নিজের দায় রেখে যান।

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ এদিনও ছিলেন মলিন। নাহিদুলের নীরিহ সোজা বলেও ক্রস করতে গিয়ে ব্যাট বল লাগাতে পারেননি। শুরুতে ধুঁকতে থাকা ইমরুল কায়েস ডানা মিলছিলেন। আরেক পাশে উইকেট পড়তে দেখে ফের গুটিয়ে যান। সেই অবস্থা থেকে আর উত্তরণ ঘটাতে পারেননি। ২৬ বল খেলে তার ২১ রানই অবশ্যই দলের সর্বোচ্চ। তাইজুল ইসলামের বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দেওয়া ইমরুলের আগেই তাইজুলের বলেই জহুরুলকেও হারায় খুলনা।

আগের দুই ম্যাচে উদ্ধারকর্তা শামীম পাটোয়ারি আর আরিফুল হক এদিন আর পারেননি। আরিফুল শেষ দিকে গিয়ে ৩০ বলে ১৫ করে বিদায় নেন। আর শামীম আউট হন ১১ রান করে। তাদের কেটে খুলনার ইনিংসের শেষ দিকটাই আতঙ্ক হয়ে উঠেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার বল থেকে রান বলতে গেলে আসেইনি, পড়েছে টপাটপ উইকেট। মাত্র ৫ রানেই তাই ৪ শিকার তার।  অর্ধেক ম্যাচেই হেরে বসা খুলনাকে মিরাকল কিছু না হলে বাঁচাতে পারতেন না বোলাররা। তা হয়নি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

জেমকন খুলনা:   ১৭.৪ ওভারে ৮৬ (এনামুল ৬,  সাকিব ৩, ইমরুল ২১ , মাহমুদউল্লাহ ১, জহুরুল ১৪ , আরিফুল ১৫, শামীম  ১১, শহিদুল ৫ , রিশাদ ০, হাসান ১ , আল-আমিন ০* ; নাহিদুল ২/১৫ , শরিফুল ০/১৯ , মোস্তাফিজ ৪/৫, তাইজুল ২/৩০ , মোসাদ্দেক ০/৯, সৌম্য ০/৬)

গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম: ১৩.৪ ওভারে ৮৭/১  (লিটন ৫৩* , সৌম্য ২৬  , মুমিনুল   ৬*  ; আল-আমিন ০/১১, সাকিব ০/১৪ ,  হাসান ০/১৭, শামীম ০/১১, শহিদুল ০/৭, মাহমুদউল্লাহ ১/১৬, রিশাদ ০/১০  )

ফল: গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ৯ উইকেটে জয়ী।

 

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago