ইরান পরমাণু বোমা বানানোর কত কাছে?

ইরানকে পরমাণু বোমা বানানোর পথ থেকে সরিয়ে রাখতে ২০১৫ সালে দেশটির সঙ্গে চুক্তি সই করেছিল বিশ্বশক্তি। তিন বছর পর সেই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ায় সৃষ্টি হয় নতুন পরিস্থিতি। ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদাহকে হত্যা করায় নতুন করে সেই চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার পথ হয়েছে আরও সংকীর্ণ।
Iran nuclear
ছবি: সংগৃহীত

ইরানকে পরমাণু বোমা বানানোর পথ থেকে সরিয়ে রাখতে ২০১৫ সালে দেশটির সঙ্গে চুক্তি সই করেছিল বিশ্বশক্তি। তিন বছর পর সেই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ায় সৃষ্টি হয় নতুন পরিস্থিতি। ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদাহকে হত্যা করায় নতুন করে সেই চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার পথ হয়েছে আরও সংকীর্ণ।

আজ রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বলা হয়েছিল, পারস্য উপসাগরীয় দেশটি যদি একটি পরমাণু বোমা বানাতে চায় তাহলে তা যেন দুই-তিন মাসের না বানিয়ে অন্তত এক বছর সময় নেয়।

ইরান বরাবর জানিয়ে আসছিল, পরমাণু বোমা বানানোর কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ বেসামরিক লক্ষ্য নিয়ে চালানো হচ্ছে।

২০১৮ সালের মে মাসে ট্রাম্প প্রশাসনের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসা ও নতুন ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর ইরানও ধাপে ধাপে চুক্তির শর্তগুলো থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে থাকে।

জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক সংস্থা আইএইএ’র মতে, ইরান সক্ষমতার চেয়ে কম গতিতে পরমাণু কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কতটা এগিয়েছে?

পরমাণু চুক্তির শর্তগুলো ইরান এখন মেনে না চললেও দেশটি আইএইএ’কে সহযোগিতা করে চলেছে। সংস্থাটির পর্যবেক্ষকদের পরমাণু স্থাপনাগুলো পরিদর্শনের অনুমতি দিচ্ছে।

চুক্তি অনুযায়ী ইরানের হাতে ২০২ দশমিক ৮ কেজি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রাখার অনুমতি রয়েছে। গত বছর ইরান সেই শর্ত থেকে সরে আসে। আইএইএ’র প্রতিবেদন মতে এখন দেশটির হাতে মজুদ রয়েছে ২ হাজার ৪৪২ দশমিক ৯ কেজি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম।

চুক্তিতে বলা হয়েছিল— ইরান ইউরেনিয়াম পরিশোধিত করতে পারবে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বোমা বানাতে প্রয়োজন ৯০ শতাংশ পরিশোধিত ইউরেনিয়াম।

গত বছর ইরান সেই শর্ত থেকে সরে এসে এখন তারা ইউরেনিয়ম পরিশোধিত করছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।

চুক্তি অনুযায়ী ইরান তার ভূগর্ভস্থ নাতানজ পরমাণু স্থাপনায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে প্রথম প্রজন্মের ৫ হাজার আইআর-ওয়ান সেন্ট্রিফিউজ ব্যবহার করতে পারবে। সেই স্থাপনায় ৫০ হাজারের বেশি সেন্ট্রিফিউজ ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে। চুক্তির আগে ইরান ১৯ হাজারের মতো সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন করেছিল।

ইরান পরমাণু বোমা বানানোর কত কাছে?

ইরানের পরমাণু বোমা বানানোর সক্ষমতা নিয়ে বিভিন্ন রকমের তথ্য পাওয়া যায়। অনেক কূটনীতিক ও পরমাণু বিশেষজ্ঞের মতে, এক বছরের মধ্যে ইরান পরমাণু বোমা বানাতে সক্ষম— এটি একটি কথার কথা। পরমাণু বোমা বানাতে ইরানের আরও বহু সময়ের প্রয়োজন।

অনেকের মতে, ইরানের হাতে যদি যথেষ্ট পরিমাণে উপকরণ থাকে তাহলে তারা একটি ছোট বোমা বানাতে পারে যা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ছোড়া হতে পারে। তবে তা বানাতে ঠিক কতো সময় লাগবে তা নিশ্চিত নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ও আইএইএ’র বিশ্বাস ইরান পরমাণু বোমা বানানোর কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল কিন্তু, পরে তারা তা বন্ধ করে দেয়। তারা যে বোমা বানানোর নকশা তৈরি করেছিল সে প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যা, ইরান যা করতে পারে

Comments

The Daily Star  | English

Fashion brands face criticism for failure to protect labour rights in Bangladesh

Fashion brands, including H&M and Zara, are facing criticism over their lack of action to protect workers' basic rights in Bangladesh, according to Clean Clothes Campaign (CCC)..One year after a violent crackdown by state actors and employers against Bangladeshi garment workers protesting

7m ago