করোনাকালে রাজধানীর শিশুদের সমস্যা তুলে ধরলো শিশুরাই

ঢাকা জেলার প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলছে রায়েরবাজার এবং চাঁদ উদ্যান এলাকায় বসবাসরত ‘শিশুদের জন্য’ চাইল্ড ফোরামের ২০ জন শিশু। ছবি: সংগৃহীত

করোনা মহামারির মধ্যে শিশু অধিকার বিষয়ক পরিস্থিতি, শিশুদের সামগ্রিক অবস্থা, সমস্যা ও উত্তরণের উপায়সহ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সুরক্ষা, পারিবারিক ও সামাজিক অধিকার বিষয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে কথা বলেছে শিশুরাই।

আজ রোববার ঢাকার জনসন রোডে অবস্থিত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা জেলার প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে রায়েরবাজার এবং চাঁদ উদ্যান এলাকায় বসবাসরত ‘শিশুদের জন্য’ চাইল্ড ফোরামের ২০ জন শিশু প্রায় দুই ঘণ্টা ওই এলাকার এবং পুরো রাজধানীর সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলাপ করে।

সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের প্রকল্প ‘শিশুদের জন্য’ এবং মানবিক সাহায্য সংস্থা (এমএসএস) এর তত্ত্বাবধানে এই আয়োজন করা হয়।

উপস্থিত শিশুরা জানায়, নয় মাস ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশুরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বিমুখ হয়ে পড়ছে। পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে সকল সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারলে শিশুরা বিদ্যালয়ে ফিরতে পারবে বলে মনে করে তারা।

ইন্টারনেট ব্যবহার করে আধুনিক ডিভাইসে ক্লাস করা যথেষ্ট ব্যয়বহুল, যা বহন করা সুবিধাবঞ্চিত শিশু এমনকি অনেক বিদ্যালয়ের পক্ষেও সম্ভব না। ফলে স্কুল থেকে ঝড়ে পড়া শিশুর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষা বিষয়ে আলোচনা করার সময় উঠে আসে এইচএসসিতে অটোপাশের বিষয়টিও। অটোপাশ দিয়ে দেওয়ার ফলে শিক্ষার্থীদের মেধার সঠিক মূল্যায়ন হয়নি বলেও উল্লেখ করে শিশুরা।

আশঙ্কাজনকভাবে এই মহামারিতে বাল্যবিবাহও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করে তারা।

রায়েরবাজার চাঁদ উদ্যান এলাকায় অনেক দিন আগে থেকেই মাদকচোরাকারবারে শিশুদের ব্যবহার করা হয়, যা এখনো হয়ে আসছে এবং তা নিরসনে কঠোরভাবে মাদক ব্যবসা দমন করার কথা বলে শিশুরা। বাবা-মায়েরা মহামারিতে কাজ হারিয়ে শিশুদেরও কাজে পাঠাচ্ছে যার ফলে শিশুশ্রম বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক বেশি।

তারা জানায়, করোনাকালীন সময়ে এই এলাকায় ১৭টিরও বেশি বাল্যবিবাহ হয়েছে, যার মধ্যে সাতটি শিশু ফোরামের মাধ্যমে বন্ধ করা হয়েছে। শিশুরা সুপারিশ করেছে যেন সরকারি হটলাইনগুলো আরও বেশি শক্তিশালী ও কার্যকর করা হয়।

রাজধানীর বেশিরভাগ খেলার মাঠ কন্সট্রাকশনের কাজে ব্যবহৃত হয় এবং যেসব খেলার মাঠ খালি আছে সেগুলোও খেলার উপযোগী থাকে না বেশিরভাগ সময়ই। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে বিশেষভাবে নজর দিতে অনুরোধ জানায় শিশুরা।

করোনাকালীন যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো উত্তরণ ও নিরসনে শিশুদের সঙ্গে আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ বলে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক।

সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তিনি মনে করেন বর্তমান বাস্তবতা সরকারের অন্যান্য মহলেও পৌঁছে দেওয়া জরুরি যে জন্য এডভোকেসি করতে হবে, লবিস্ট নিয়োগ করতে হবে।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সরকারের নীতিমালায় যেনো শিশুদের সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত হয় সে জন্য আমি অবশ্যই কাজ করব।’

আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক ফাতেমা জোহরা, শিশু একাডেমীর জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা রাশিদা বেগম এবং সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের কর্মকর্তা আবু জাফর।

Comments

The Daily Star  | English

Govt calls for patience as it discusses AL ban with parties

Taken the initiative to introduce necessary amendments to the ICT Act, says govt

1h ago