ভুলে ভরা ম্যাচে নায়ক শুভাগত
টপাটপ উইকেট হারিয়ে বাজে শুরু করেছিল জেমকন খুলনা। তাদের নড়বড়ে চলার পথ দৃষ্টিকটু ফিল্ডিংয়ে এগিয়ে নেন ঢাকার ফিল্ডাররাই। বারবার সুযোগ পেয়ে মাহমুদউল্লাহর ধুঁকে ধুঁকে করা এক ইনিংসে এগোয় খুলনা। শেষ দিকে শুভাগত হোমের ছোট্ট ঝড়ে দেড়োশর কাছে যায় তারা। পরে বল হাতেও এই অলরাউন্ডার ছিলেন দলের সেরা। ব্যাটিংয়ের ব্যর্থতা ভুলে দারুণ কিপটে বোলিংয়ে সাকিব আল হাসানও রাখেন অবদান। মুশফিকুর রহিমের বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা তাই গেছে বিফলে।
টানা দুই হারের পর বেক্সিমকো ঢাকাকে ৩৭ রানে হারিয়েছে খুলনা। ঢাকার ১৪৬ রানের জবাবে কেবল ১০৯ রান করে ঢাকা । এই নিয়ে মুশফিকের দল তিন ম্যাচ খেলে সবগুলোতেই হারল।
সোমবার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের রাতের ম্যাচটি ছিল বাজে ক্রিকেটের প্রদর্শনী। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে ভুলের ছড়াছড়ির মাঝে ৫ বলে ১৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসের পর ১৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নায়ক শুভাগত।
রান তাড়ায় নেমে ভয়াবহ শুরু হয় ঢাকার। শুভাগতের প্রথম ওভারে এক চার মেরেই বোল্ড হয়ে যান তানজিদ হাসান তামিম। সাকিব তৃতীয় ওভারে এসে বোল্ড করে দেন নাঈম শেখকে। প্রথম দুই ওভারই মেডেন নেন তিনি।
তিনে নামা রবিউল ইসলাম ফিরে যান শহিদুলের বলে। ১৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ঢাকা। সেই চাপ সামলাতে ইয়াসির আলিকে সঙ্গী পান মুশফিকুর রহিম। চতুর্থ উইকেটে তাদের জুটিতে আসে ৫৭ রান। খেলায়ও ফেরে ঢাকা। ২৯ বলে ২১ রান করে হাসান মাহমুদের বলে স্টাম্প ছেড়ে মারতে গিয়ে বোল্ড হন ইয়াসির। স্টাম্প উড়ে যায় প্রায় কিপারের কাছে।
মুশফিক ছিলেন ভরসা হয়ে। আস্থার ছবি ছিল তার ব্যাটে। দলকে জেতাতে হলে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার দরকার ছিল অধিনায়কের। কিন্তু শুভাগত পরের স্পেলে এসে কাবু করেছেন তাকেও। রান বাড়ানোর চাপে শুভগতকে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মুশফিক। ৩৫ বলে ৫ চারে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৭ রান।
যুব বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলি এই ম্যাচেও দিতে পারেননি আস্থার প্রতিদান। এবার হাসান মাহমুদের বলে ফ্লিক করে ক্যাচ দিয়েছেন স্কয়ার লেগে। ৪ রান করেছেন ৮ বল নষ্ট করে। আর খেলায় ফেরার পথ ছিল না তাদের। বাকি উইকেটগুলো ভাগাভাগি করে নিয়েছেন শহিদুল, হাসান, শুভাগতরা।
এর আগে খুলনার ইনিংসে ছিল বাজে ক্রিকেটে ভরপুর। শুরুতে উইকেট হারিয়ে চাপে থাকা খুলনাকে নিশ্বাস নেওয়ার জায়গা দেন ঢাকার ফিল্ডাররা। একের পর এক ক্যাচ মিসের মহড়া চলে, রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া হয়। ফিল্ডিংয়ে সহজ বলও ধরতে পারছিলেন না তারা। তিনবার জীবন পেয়েও মাহমুদউল্লাহ তবু করতে পেরেছেন ৪৭ বলে ৪৫ রান। রান আউটে বেঁচে গিয়ে ইমরুল কায়েস থামেন ২৯ বলে ২৭ করে ।
খুলনার ইনিংসে এই দুজন ছাড়া রান বাড়ানোর কাজ করেছেন আরিফুল হক আর শুভাগত। ১১ বলে ৩ চারে ১৯ আসে ছন্দে থাকা আরিফুলের ব্যাট থেকে। শেষ দিকে নেমে শুভাগত মাত্র ৫ বলে ১৫ করে দলকে নিয়ে যান দেড়শোর কিনার। সেটাই পরে হয়ে যায় শক্ত পূঁজি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জেমকন খুলনা: ২০ ওভারে ১৪৬/৮ (এনামুল ৫, সাকিব ১১, জহুরুল ৪, ইমরুল ২৭ , মাহমুদউল্লাহ ৪৫ , আরিফুল ১৯, শামীম ১, শুভাগত ১৫*, শহিদুল ১ ; রুবেল ৩/২৮, শফিকুল ২/৩৪, নাসুম ০/১০, নাঈম ১/১৬, মুক্তার ০/৩৯, রবিউল ০/৭)
বেক্সিমকো ঢাকা: ১৯.২ ওভার্ব ১০৯ (তানজিদ ৪ , নাঈম ১, রবি ৪ , মুশফিক, ইয়াসির ২১, আকবর ৪, মুক্তার ৪, নাঈম ৩, নাসুম ৭, রুবেল ৪ , শফিকুল ৫* ; শুভাগত ৩/১৩ , আল-আমিন ০/২৫, সাকিব ২/৮, শহিদুল ৩/৩০, হাসান ২/২২)
ফল: জেমকন খুলনা ৩৭ রানে জয়ী।
Comments