পরমাণু বিজ্ঞানীকে ইসরায়েল হত্যা করেছে: ইরান

ইরানের প্রধান পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদাহর হত্যাস্থল। ছবি: রয়টার্স

ইরানের প্রধান পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদাহকে ইসরায়েল দূর-নিয়ন্ত্রিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা।

গতকাল সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরানে মোহসেনের দাফন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মহাসচিব আলি শামখানি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘এই হত্যা অভিযান খুবই জটিল ছিল। এ কাজে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। কোনো হামলাকারী ঘটনাস্থলে ছিল না।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘ইসরায়েল ও এর জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এই হামলার পেছনে কাজ করেছে— এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’

‘ইসরায়েল ২০ বছর আগেই মোহসেনকে হত্যা করতে চেয়েছিল’ উল্লেখ করে শামখানি বলেছেন, ‘এবার তারা সম্পূর্ণ পেশাগতভাবে উন্নত ও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে এবং অবশেষে সফল হয়েছে।’

এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ইরানের বিদ্রোহী গোষ্ঠী মুজাহিদিন-এ খালকের ভূমিকা রয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন।

শামখানির এমন অভিযোগের ফলে মোহসেন হত্যার বিষয়টি নতুন মাত্রা পেল বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথম দিকে সংবাদ প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছিল, রাস্তার পাশে একটি পিকআপ ট্রাক বিস্ফোরিত হয়। তারপর কয়েকজন বন্দুকধারী মোহসেনের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। সে সময় মোহসেন ও তার এক দেহরক্ষী আহত হন।

ইরানের সংবাদমাধ্যম গত কয়েকদিন থেকে এমন তথ্যই প্রচার করছিল। কিন্তু, শামখানির অভিযোগের মধ্য দিয়ে নতুন তথ্য উঠে এসেছে।

স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত?

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের আরবি ভাষার চ্যানেল আল-আলম দাবি করেছে, হামলায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রগুলো ‘স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত’ ছিল।

গতকাল সোমবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের ইংরেজি ভাষার চ্যানেল প্রেস টিভি জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সেই অস্ত্রের গায়ে লগো ও ইসরায়েলের সামরিক কারখানার তথ্য ছিল।

গত রোববার ইরানের আধা-সরকারি ফারস নিউজ জানিয়েছিল, পিক-আপ ট্রাকের ওপর রাখা একটি দূর-নিয়ন্ত্রিত মেশিনগান থেকে গুলি ছোড়া হয়েছিল। পরে সেই ট্রাকটি বিস্ফোরিত হয়।

ফারস নিউজে আরও বলা হয়েছিল, প্রথমে কয়েকটি গুলি ছোড়া হলে মোহসেন তার বুলেট প্রুফ গাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন এই ভেবে যে হয়তো গাড়িতে কোনো সমস্যা হয়েছে। তারপর তাকে লক্ষ্য করে আরও কয়েকটি গুলি ছোড়া হয়।

সব সংবাদমাধ্যম সূত্রের নাম প্রকাশ না করে সংবাদ পরিবেশন করেছিল। এবং তাদের তথ্যের পেছনে কোনো প্রমাণ উল্লেখ করা ছিল না।

সন্ত্রাসী কাজ

মোহসেন ফখরিজাদাহ হত্যাকাণ্ডকে ইরান শুরু থেকে ‘সন্ত্রাসী কাজ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে এসেছে। পাশাপাশি এই হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতীজ্ঞাও করেছেন দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারা।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক দশক ধরে ইরানে বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্যে সব সময়ই ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার তেহরানে প্রকাশ্য দিবালোকে দেশটির প্রধান পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদাহকে হত্যা করা হয়।

আরও পড়ুন:

ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী আততায়ী হামলায় নিহত

‘দায়ী ইসরায়েল’ পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যার কঠিন প্রতিশোধ নেবে ইরান

পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যা, ইরান যা করতে পারে

ইরান পরমাণু বোমা বানানোর কত কাছে?

Comments

The Daily Star  | English

Ishraque supporters protest in different parts of Dhaka

Protesters assembled at Matsya Bhaban, Kakrail and Jatiya Press Club, demanding that Ishraque be immediately sworn in as the mayor of the DSCC

10m ago