কৃষকের মুখে হাসি এনেছে চরের কাশ
কয়েক দফা বন্যা, বন্যা পরবর্তী ভাঙন এবং করোনা পরিস্থিতির মধ্যে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের কাশ কৃষকের মুখে হাসি এনেছে। দুই জেলার ছয়টি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীতে জেগে ওঠা দেড় শতাধিক চরে এবার জন্মেছে কাশ। গত বছরের তুলনায় দামও তিন গুণ বেড়েছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কয়েক দফা বন্যা ও বন্যা পরবর্তীতে ভাঙনে অনেক কাশ বন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যে কারণে এবার কাশের সরবরাহ কম। চরের বালু মাটিতে প্রাকৃতিকভাবে কাশ জন্মায়। কৃষককে শুধু পরিবহন খরচ ব্যয় করতে হয়। চরাঞ্চলের কৃষকদের এটি বাড়তি আয়ের উৎস। দুই জেলায় পাঁচ হাজারের বেশি কৃষকের সংসার চলছে কাশ বিক্রি করে।’
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চর কড়াই বরিশালের কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘গত বছর এক আঁটি কাশ বিক্রি করেছিলামন পাঁচ টাকায়। এ বছর তিন গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। দুই বিঘা জমি থেকে পাঁচ হাজার নয় শ আঁটি কাশ পেয়েছি। প্রতি আঁটি ১৫ টাকা দরে বিক্রি করেছি। কেটে বাজারে নিয়ে যেতে খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা।’
একই চরের কৃষক খেতাব আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত বছর পাঁচ বিঘা জমিতে কাশ হয়েছিল। এবারের ভাঙনে দুই বিঘা জমি ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়ে গেছে। রাজশাহী, কুষ্টিয়া, বরগুনা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, যশোহরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা এসে আমাদের কাছ থেকে কাশ কিনে নিয়ে যান।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর কুলাঘাট এলাকার কৃষক সামাদ মিয়া বলেন, ‘এ বছর কাশের উৎপাদন কম হলেও তিন গুণ দাম পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে তিন হাজার আঁটি কাশ পাওয়া যায়।’
রাজশাহী থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার জোড়গাছ বাজারে পাইকারি দরে কাশ কিনতে এসেছেন জোবেদ আলী। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চরাঞ্চল থেকে কাশ কিনে ট্রাক অথবা নৌকায় নিয়ে যাই আমরা। পান চাষিরা আমাদের কাছ থেকে কাশ কিনে পানের বরজে ব্যবহার করেন।’
Comments