আজকের দিনে হানাদার মুক্ত হয়েছিল লালমনিরহাট

লালমনিরহাট মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি: স্টার

আজ ৬ ডিসেম্বর লালমনিরহাট মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে লালমনিরহাট পাক-হানাদার মুক্ত হয়েছিল।

লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় শহর হওয়ায় অবাঙালিদের বাস ছিল এখানে। আর উর্দুভাষী অবাঙালিদের সহযোগিতায় পাকবাহিনী লালমনিরহাটে চালিয়েছিল নৃশংস হত্যাযজ্ঞ।

৬ ডিসেম্বর সুর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার বীর সেনানী মুক্তিযোদ্ধারা ‘জয়বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছিলেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘রেলওয়ে বিভাগীয় শহর-খ্যাত লালমনিরহাট ছিল বিহারি অধ্যুষিত এলাকা। তাদের সহযোগিতায় পাকহানাদার নির্বিচারে নির্মমভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। পৈশাচিক নির্যাতন করে হত্যা করেছিল বাঙালি নারীদের।’

‘রেলওয়ে রিকশাস্ট্যান্ড ও বর্তমানে বিডিআর ক্যাম্পে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে লাশ ফেলে দিয়েছিল যত্রতত্র,’ যোগ করেন তিনি।

যুদ্ধকালীন প্লাটুন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম মন্টু ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ৬ নং সেক্টরের অধীনে লালমনিরহাটের বিভিন্নস্থানে মুক্তিযোদ্ধারা খেয়ে না খেয়ে পাক-হানাদারদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ করে বিজয় নিশ্চিত করেন। পাক বাহিনী পালিয়ে যাওয়ার সময় লালমনিরহাটের প্রবেশদ্বার তিস্তা রেল সেতুতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল।’

‘পরে মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় এক মাসের মধ্যেই সেতুটি মেরামত করে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখা হয়।’

লালমনিরহাট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সঠিকভাবে প্রণয়ন করে তাদের পুনর্বাসনে আরও বেশি ভূমিকা নেওয়াসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন স্মৃতি বিজড়িত স্থান ও গণকবরগুলো চিহ্নিত ও সংস্কারের দাবি রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের।’

করোনা মহামারির কারণে এ বছর লালমনিরহাট মুক্ত দিবস উপলক্ষে নেওয়া হয়নি কোনো অনুষ্ঠান। অন্যান্য বছরের মতো এবার নেই বিজয় র‌্যালি, আলোচনা সভা বা মিষ্টি বিতরণ।

তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষে আজ রোববার বিকাল সাড়ে ৩টায় ভার্চুয়াল আলোচনা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্য, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক ব্যক্তি, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন।

Comments

The Daily Star  | English