বিপদে পড়া দলকে তীরে ভিড়িয়ে নায়ক মাহমুদউল্লাহ
নাজমুল হোসেন শান্তর ফিফটি আর নুরুল হাসান সোহানের শেষের ঝড়ে লড়াইয়ের পূঁজি পেয়েছিল রাজশাহী। রান তাড়ায় দারুণ শুরু করা খুলনাকে মাঝপথে টেনে ধরে ম্যাচেও ফিরেছিল তারা। তবে শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ সব সংশয় দূর করে করেছেন। দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের বন্দরে।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে প্রথম দুই ম্যাচ জিতেছিল মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। পরের চার ম্যাচেই হারল তারা। রোববার ১৪৫ রান করে ৪ বল বাকি থাকতে তারা খুলনার কাছে হারে ৫ উইকেটে। ওপেনার জহুরুল ৩৯ বলে ৪৩ করলেও ১৯ বলে ৩১ করে দলের জয়ে বড় অবদান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর। প্রথম তিন ম্যাচে দুই হারের পর জেমকন খুলনা জিতল টানা তিন ম্যাচ।
নাগালের মধ্যে থাকা রান তাড়ায় নেমে দুই ওভার একটু রান পেতে ভুগেছিল খুলনা। পাওয়ার প্লের বাকিটা সময় দুই ওপেনার আনেন দারুণ শুরু। ভাগ্যের সহায়তায় জহুরুল ইসলাম কিছু রান পেয়ে যাওয়ার পর পেয়ে যান তালও। দ্রুতই রান বাড়াতে থাকেন তারা।
প্রথম ৬ ওভারে আসে ৪৩ রান। দুজনেই খেলছিলেন স্বচ্ছন্দে। কয়েকটি ডট বল খেলার পর জাকির কিছুটা অস্থির উঠছিলেন। নবম ওভারে দিয়েছেন তার খেসারত। আরাফাত সানির বলে ক্যাচ দিয়ে থামে তার ২০ বলে ১৯ রানের ইনিংস। তবে ওপেনিংয়ে ৫৬ রানের ভিত তখন পেয়ে গেছে খুলনা।
ওয়ানডাউনে নেমে ইমরুল কায়েস শুরু থেকেই স্বচ্ছন্দ। জুহুরুল এগুচ্ছিলেন ফিফটির দিকে। চিন্তার কোন ছায়া ছিল না। জহুরুল অবশ্য ধর্য্যহারা হলেন। ফরহাদ রেজাকে উড়াতে গিয়ে ৪৩ রানে থামেন তিনি। ৪০ বলের ইনিংসে ৬ চারের সঙ্গে মেরেছে ১ ছক্কা।
ইমরুল সুযোগ দিয়েছিলেন। মুকিদুলের বলে পুল করতে মিসটাইমিংয়ে ক্যাচ উঠেছিল। ১৯ রানে থাকা সহজ সে ক্যাচ নিতে পারেননি সাইফুদ্দিন। জীবন পেয়ে পরের বলেই ছক্কায় তা উদযাপন করেন ইমরুল। পরের বলেই এলবিডব্লিউতে শেষ হয় তার ইনিংস।
সাকিব এই ম্যাচেও পারেননি ছন্দে ফিরতে। অস্বস্তিতে ভোগা এই তারকা এবার উইকেটে টেনে বোল্ড হয়েছেন সাইফুদ্দিনের বলে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর ৬ ম্যাচে সাকিবের কাছ থেকে এল কেবল ৫৯ রান। পরের ওভারে শামীম পাটোয়ারিকে এলবিডব্লিউতে ফেরান মুকিদুল। বেশ ভালোভাবেই ম্যাচে ফেরে রাজশাহী।
শেষ ৩ ওভারে জিততে দরকার দাঁড়ায় ৩২ রান। শেখ মেহেদীর ১৮তম ওভার থেকে ১১ রান নেন মাহমুদউল্লাহ-আরিফুল। সাইফুদ্দিনের ১৯তম ওভারেই ম্যাচের গতিপথ ঠিক হয়ে যায়। শুরুতে দারুণ বল করেছিলেন। প্রথম দুই বলে দিয়েছিলেন ২ রান। পেতে পারতেন উইকেটও। এরপরই ইয়র্কার মারতে গিয়ে টানা কয়েকটি ফুলটসে দলকে ডুবিয়েছেন তিনি। ওই ওভারে একটি লেগবাইসহ আসে ১৫ রান। শেষ ওভারে মুকিদুলের পক্ষে ৬ রান আটকানো সম্ভব ছিল না।
এর আগে আগে ব্যাটিং পেয়ে রাজশাহীর ইনিংসের বেশিরভাগ টেনেছেন অধিনায়ক শান্ত। তার ৩৮ বলে ৫৫ রানের ইনিংস শেষ হওয়ার পর বেশ ধুঁকতে থাকে রাজশাহীর ইনিংস। এক পর্যায়ে জুতসই রান পাওয়া নিয়ে দেখা দেয় শঙ্কা। ১৯তম ওভারে আল-আমিনকে পিটিয়ে ২২ রান নিয়ে সেই শঙ্কা দূর করেন নুরুল হাসান সোহান।
তবে সাতে জাকের আলি অনিকের জায়গায় ফরহাদ রেজা কিংবা সাইফুদ্দিনকে নামানো যেত কিনা এই প্রশ্ন হয়েছে বড়। কারণ শেষ দিকে আরও কিছু রান এলে ম্যাচটা নিশ্চিতভাবে অন্যরকম হতে পারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী: ২০ ওভারে ১৪৫ (শান্ত ৫৫, আনিসুল ১, রনি ১৪, শেখ মেহেদী ৯, ফজুলে মাহমুদ ৯ , নুরুল ৩৭, জাকের ১৫ ; আল-আমিন ১/৩৫, শুভাগত ২/২৫, সাকিব ০/১৬ , শহিদুল ১/৪৩, হাসান ০/১৬, মাহমুদউল্লাহ ১/৪)
জেমকন খুলনা : ১৯.২ ওভারে ১৪৬/৫ (জুহুরুল ৪৩, জাকির ১৯, ইমরুল ২৭, সাকিব ৪ , মাহমুদউল্লাহ ৩১* , শামীম ৭, আরিফুল ১০* ; সাইফুদ্দিন ১/৩৩, মেহেদী ০/৩০, সানি ১/২৩, মুকিদুল ২/৩২, রেজা ১/২৭ )
ফল: জেমকন খুলনা ৫ উইকেটে জয়ী।
Comments