‘প্রেমিকাকে’ বিয়ে করায় গলা কেটে হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তি
চট্টগ্রামের আনন্দবাজার সাগরপাড় এলাকায় গত ১৮ নভেম্বর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করে খুনের রহস্য উন্মোচন করার কথা জানিয়ে পুলিশ বলেছে, ‘প্রেমিকাকে’ বিয়ে করায় ক্ষোভে প্রেমিকার স্বামীকে ভাড়াটে খুনির সহযোগিতায় হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃত দুই যুবক হলেন—মো. শামীম ও তার সহযোগী মো. সোহাগ। তারা স্থানীয় একটি ডিপোর শ্রমিক। নোয়াখালীর চরজব্বরের দুর্গম এলাকা থেকে তারা গ্রেপ্তার হয়েছেন।
হত্যার দায় স্বীকার করে ইতিমধ্যে এই দুজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে সোমবার বন্দর থানা পুলিশ জানায়।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বন্দর জোনের সহকারী কমিশনার কীর্তিমান চাকমা জানান, ‘ভিক্টিম ইব্রাহিম খলিল (৩৫) পেশায় একজন দিনমজুর। দুই বছর আগে তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হলে কিছুদিন আগে রুপিয়া নামের আরেক নারীকে বিয়ে করে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বসবাস শুরু করেন। রুপিয়ার আগের ঘরের স্বামী সাত বছর আগে মারা গেছেন।’
‘রুপিয়ার প্রথম স্বামী মারা যাবার পর আজহার নামের একজন তাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে কিন্তু আজহার বিবাহিত হওয়ায় এবং তাকে তালাক দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় রুপিয়া ইব্রাহিম খলিলকে বিয়ে করেন। নতুন দম্পতি চার মাস আগে চট্টগ্রামের সাগরিকা এলাকায় এসে বসবাস শুরু করেন।’
কীর্তিমান চাকমা বলেন, ‘বিয়ে করে প্রেমিকার অন্যত্র চলে যাওয়া আজহার মেনে নিতে পারেনি। প্রতিশোধ নিতে তিনি ইব্রাহিমকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।’
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন জানান, ‘আজহারের খালাতো ভাই সোহাগ চট্টগ্রামের বন্দরে একটি ডিপোতে কাজ করার সুবাদে আজহার তাকে বিষয়টি জানায় এবং ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ইব্রাহিমকে হত্যার পরিকল্পনা করতে বলে।’
‘সোহাগ তার বন্ধু শামীমকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে সঙ্গে নেয়। অন্যদিকে কৌশলে ইব্রাহিমের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে সময় কাটাতে শুরু করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৭ নভেম্বর সকালে বাজার থেকে ছুরি কিনে এবং ইব্রাহিমকে কম দামে ইলিশ কেনার কথা বলে তারা দুইজন বিকেলে তাকে আনন্দবাজার সাগরপাড়ে নিয়ে যায়। কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে কিনারায় নিয়ে গিয়ে ইব্রাহিমের গলায় ছুরিকাঘাত করে শামীম তাকে সমুদ্রে ফেলে দেয়,’ বলেন ওসি।
বন্দর জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার অলোক বিশ্বাস বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধারের পর ভিক্টিমের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে পিবিআই-এর সহায়তায় পরিচয় নিশ্চিতের পর প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে।’
‘ঘটনার মুল হোতাকে ধরতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেন জানান,’ এই পুলিশ কর্মকর্তা।
Comments