বেগমগঞ্জে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: দেলোয়ারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের অভিযোগপত্র

Noakhali.jpg
আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের আগে পিবিআই নোয়াখালী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। ছবি: স্টার

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল ও পিবিআই নোয়াখালী কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান মুন্সি নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উৎপল চৌধুরীর আদালতে এ অভিযোপত্র জমা দেন।

এর আগে, বেলা ১১টার দিকে পিবিআই নোয়াখালী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেসময় জানানো হয়, উক্ত ঘটনায় দায়েরকৃত দুই মামলা থেকে গ্রেপ্তারকৃত আসামি রহমত উল্লাহ ও মাইন উদ্দিন শাহেদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

পিবিআই কর্মকর্তা মো. ইকবাল জানান, অভিযুক্ত ১৪ জনের মধ্যে ১২ জন গ্রেপ্তার ও দুজন পলাতক আছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন, পর্নোগ্রাফি ও ধর্ষণ আইনে দায়ের করা ৩টি মামলায় প্রধান অভিযুক্ত বেগমগঞ্জের একলাশপুর এলাকার বাহিনী প্রধান দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু, জামাল উদ্দিন ওরফে প্রবাসী জামাল, নূর হোসেন বাদল, আব্দুর রহিম, মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল কালাম, শামসুদ্দিন সুমন ওরফে কন্ট্রাক্টর সুমন, ইস্রাফিল হোসেন মিয়া, মাইন উদ্দিন সাজু, নূর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ, আব্দুর রব চৌধুরী ওরফে লম্বা চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে আরিফ, মিজানুর রহমান ওরফে তারেক ও মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ ওরফে সোহাগ মেম্বার বর্তমানে নোয়াখালী জেলা কারাগারে আছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গৃহবধূ নির্যাতন ও ধর্ষণের দুটি মামলা গত ১৯ অক্টোবর তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল ও নোয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী তদারকি করেন। পরবর্তীতে পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজুল মোস্তফাকে ধর্ষণের মামলা ও পুলিশ পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারীকে নির্যাতনের মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ধর্ষণ মামলার দুই আসামি ও নির্যাতন মামলায় ওই দুই জনসহ ১০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে আট জন আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মো. ইকবাল আরও জানান, মামলা গ্রহণের ৬৯ দিনের মাথায় এবং ৪৮ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করে আজ দুপুরে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পিবিআই। পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে বসতঘরের দরজা ভেঙে স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর লোকজন ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে। এসময় তারা ওই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিওধারণ করে। পরে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল দেলোয়ার বাহিনীর লোকজন। এতে ভুক্তভোগী নারী রাজি না হওয়ায় তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিতে থাকে। গত ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় দেলোয়ার বাহিনীর লোকজন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।

এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে দুইটি মামলা করেন। পরে ৬ অক্টোবর দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ওই নারী ধর্ষণ মামলা করেন। গত ৪ অক্টোবর রাতে দেলোয়ারকে নারায়ণগঞ্জ থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। ধর্ষণ মামলাটি গত ২৩ অক্টোবর বেগমগঞ্জ মডেল থানা থেকে পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago