জামায়াত আমিরকে ‘মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা’ দিলেন আ. লীগ সংসদ সদস্য
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেত্রীর কাছ থেকে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা গণসংবর্ধনা’ পেয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন আমির।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের সম্মেলন কক্ষে গত শনিবার বিকালে ওই পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের নারী সংসদ সদস্য ও সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলি আজাদ আশুগঞ্জ উপজেলা শাখা জামায়াতে ইসলামীর আমির তাজুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ফুল দিচ্ছেন, এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়।
শরীফপুরে ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৭৪ জন। তাদের মধ্যে ৪৩ জন মারা গেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন সংবর্ধিত তাজুল ইসলাম। মুক্তিযোদ্ধার গ্যাজেটে তার নাম আছে। পেশায় হোমিও চিকিৎসক তাজুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি করছেন এবং নাশকতার মামলায় জেলও খেটেছেন।
জানা যায়, শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য শিউলি আজাদ। অনুষ্ঠানে ওই জামায়াত নেতার সঙ্গে অন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রয়াতদের পরিবারের সদস্যদের হাতে ক্রেস্ট ও ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারাই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। আমাকে সভাপতিত্ব করতে অনুরোধ করায় আমি তাদের অনুরোধ রক্ষা করেছি।’
তিনি দাবি করেন, জামায়াত নেতা তাজুল ইসলামকে অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করা হয়নি। এলাকায় মাইকিং শুনে তিনি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলি আজাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তাজুল ইসলামকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না, তার রাজনৈতিক পরিচয়ও জানি না। ওই এলাকায় এক বিয়ে বাড়িতে যোগদানের পর আমাকে ওই অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি জানলে কোনো জামায়াত নেতার হাতে ফুল তুলে দিতাম না।’
এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পরে বিবৃতি দিয়েছেন সংসদ সদস্য শিউলি আজাদ। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানে কোনো ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকলে সম্পূর্ণ দায়ভার আয়োজকদের। এর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক নেই।’
Comments