আমন মৌসুমের ফসল তুলেও কৃষকের গোলা ধানশূন্য
আমন মৌসুমের ফসল তুলেও ধানের অভাবে পড়েছেন লালমনিরহাটের কৃষক পরিবারগুলো। তারা বলেন, এ বছর ধানের উৎপাদন কম হয়েছে। তবে, ধানের উপযুক্ত দাম থাকায় লোকসানে পড়তে হয়নি। সংসার চালাতে উৎপাদিত সব ধানই বিক্রি করে দিতে হয়েছে। এখন বেশি দামে বাজার থেকে চাল কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট গ্রামের কৃষক মহির উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গত বছর আমন মৌসুমে তিনি সাত বিঘা জমি থেকে ৮০ মণ ধান পেয়েছিলেন। এ বছর পেয়েছেন ৫২ মণ ধান। বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় তিনি উৎপাদিত সামান্য ধান রেখে সবটা বিক্রি করে দিয়েছেন। ঘরে ধান নেই, বাজারে চালের দাম বেশি।
একই গ্রামের কৃষক মনছের আলী বলেন, এ বছর কয়েক দফা বন্যার কারণে আমনের চারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। অনেকে খেত থেকে এ বছর অর্ধেকের কম ফসল পেয়েছেন। তবে ধানের দাম বেশি থাকায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হননি। দাম বেশি থাকায় সব ধান বিক্রি করে বিপাকে পড়েছি। ঘরে ধান নেই, বেশি দামে বাজার থেকে চাল কিনতে হচ্ছে।
আদিতমারী উপজেলার দৈলজোড় গ্রামের কৃষক নবীন চন্দ্র বর্মণ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তিনি প্রতি মণ ধান এক হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন। গত বছর বিক্রি করেছিলেন ৪৫০ টাকা দরে। খড় বিক্রি করেই এবার উৎপাদন খরচ চলে এসেছে। আমি ১৫ বিঘা জমি থেকে এ বছর ১২০ মণ ধান পেয়েছি। মাত্র ১০ মণ রেখে বাকি সব ধান বিক্রি করে দিয়েছি। এখন চাল কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ বছর লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলায় ৮৫ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল সাড়ে চার লাখ মেট্রিক টন ধান।
অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামিম আশরাফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ধানের ফলন ভালো হয়েছে। দফায় দফায় বন্যার কারণে কোনো কোনো জমিতে ধানের ফলন কম হয়েছে। দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা উৎপাদিত সব ধান বিক্রি করেছেন। যে কারণে তাদের ঘরে ধান নেই।
Comments