‘এই ধর্মঘট আদালত অবমাননার শামিল’

সিলেটে পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও গণপরিবহন শ্রমিকদের ডাকে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটকে আদালত অবমাননার শামিল বলে অভিহিত করে বিবৃতি দিয়েছেন সিলেটের ১০ নাগরিক।
আজ বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতারের পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ ধরণের কার্যক্রম প্রতিহত করে আদালতের রায় বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়।
অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার ছাড়াও এতে বিবৃতি দিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ মাহমুদ চৌধুরী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, ব্লাস্টের সিলেট সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মো. ইরফানুজ্জামান চৌধুরী, সচেতন নাগরিক কমিটি সিলেটের সভাপতি সমিক শহিদ জাহান, আইডিয়ার নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি সিলেটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দা শিরীন আক্তার, মনিপুরি সাহিত্য সংসদের সভাপতি এ কে শেরাম ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম।
সিলেট জেলার চারটি উপজেলায় পাথর উত্তোলনের কারণে পরিবেশ বিপর্যস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করতে উচ্চ আদালতের বিভিন্ন আদেশ বাস্তবায়নে চলতি বছরের শুরু থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেয় সিলেটের প্রশাসন। এছাড়াও চলতি বাংলা সালে সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি ইজারা দেয়নি খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো।
আদালতের রায় অমান্য করে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিকরা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে সিলেট বিভাগে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেন। এ ধর্মঘটে পরিবহন শ্রমিকরাও যুক্ত হয়েছেন।
বিবৃতিতে নাগরিকরা বলেন, ‘এ অবস্থায় আদালতের নির্দেশনা এবং রায়ের বিরুদ্ধে এ ধরণের কার্যক্রম আয়োজন, অংশগ্রহণ ও সমর্থন আদালত অবমাননার শামিল। আদালতের অবমাননাকর কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের কোনো কার্যকর ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। একইসঙ্গে বেআইনি কার্যক্রম প্রতিহত করে আদালতের রায় বাস্তবায়ন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাচ্ছি।’
তারা পরিবেশ ও জনস্বার্থে সরকার ও রাজনৈতিক উচ্চমহলকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।
বিবৃতিতে নাগরিকরা উল্লেখ করেন, ২০০৫ সাল থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে ৯৬ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
যান্ত্রিকভাবে পাথর উত্তোলন করার কারণে এসকল অঞ্চলের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ভয়াবহভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে বলেও তারা উল্লেখ করেন।
Comments