নারায়ণগঞ্জের গির্জাগুলোতে বড়দিনের প্রস্তুতি, করোনায় সীমিত আয়োজন

আর মাত্র এক দিন পরই খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব বড়দিন। উৎসবকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জের গির্জাগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। তবে করোনার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসব সীমিত পরিসরে করার কথা জানিয়েছেন গির্জা কর্তৃপক্ষ।
ছবি: স্টার

আর মাত্র এক দিন পরই খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব বড়দিন। উৎসবকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জের গির্জাগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। তবে করোনার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসব সীমিত পরিসরে করার কথা জানিয়েছেন গির্জা কর্তৃপক্ষ।

বুধবার দুপুরে সরেজমিনে শহরের চাষাঢ়ায় বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশের সাধু পৌলের গির্জা ও কালীরবাজার এলাকায় নারায়ণগঞ্জ ব্যাপ্টিস্ট চার্চে গিয়ে দেখা যায়, গির্জাগুলোর বাইরে ও ভিতরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ চলছে। রঙ মিস্ত্রী ভবনের দেওয়ালে নতুন রঙ করছেন। চলছে আলোকসজ্জার কাজ। এছাড়াও গির্জার ভেতরে রঙিন কাগজ, ফুল ও আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। খড়কুটো বিছানো গোশালা করা হচ্ছে। যেখানে শিশু যিশুর মূর্তির সঙ্গে আরও কিছু মূর্তি।

সাধু পৌলের গির্জায় বড়দিনের উৎসবের সাজসজ্জার কাজ করা নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী ইসুদুর পৌরন্দি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বড়দিন উপলক্ষে গির্জায় রঙ ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। গির্জার ভেতরে সাজসজ্জার কাজ হচ্ছে। সর্বত্রই করোনা প্রভাব বিস্তার করছে। তাই আগের মতো জমকালো আয়োজন হচ্ছে না। সবকিছু ঘরোয়াভাবে উদযাপন করা হবে। ২৫ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থনায় শুধু খ্রিস্টানরাই আসতে পারবেন। করোনার জন্য বহিরাগত কাউকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে বন্ধুদের সঙ্গে বড়দিন ঘুরাতে যাওয়া, আড্ডা দেওয়া, আনন্দ করে কেটেছে। তবে এবার সাদামাটাভাবে পরিবার সদস্যদের মধ্যেই উদযাপন করব। কারণ আমরা সবাই সুস্থ থাকলে পরবর্তীতে আবারও আনন্দ করতে পারব।’

ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পাস্টার লিওনার্ড বিধান রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বড়দিন হচ্ছে বিশ্বের সমগ্র মানব জাতির পাপমুক্তির দিন। এদিনে প্রভু যিশু স্বর্গধাম থেকে ধরাধামে এসেছিলেন। মানবজাতির মুক্তির জন্য জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এজন্যই আমরা বড়দিন উদযাপন করি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালোভাবে চলছে। এ মুহূর্তে গির্জার প্রার্থনা ঘরে রঙ করা হচ্ছে। পরে সাজসজ্জা হবে। পরদিন আলোকসজ্জা হবে। তবে করোনার জন্য কিছু প্রস্তুতি সীমিত করা হয়েছে। যেমন বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না, গোশালা হবে না, নগর কীর্তন হবে না, লোক সমাগম কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু প্রার্থনা, কেক কাটা ও ধর্মীয় আরাধনা সঙ্গীতের মধ্যে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হবে। এছাড়াও করোনা প্রতিরোধে আমরা গির্জায় হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবস্থা, উপাসনায় দেড় থেকে দুই ফুট দূরত্ব বজায় রাখা ও অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করে প্রবেশ নিশ্চিত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো। বড়দিনের সকাল থেকেই পুলিশ দেওয়া হবে জানিয়েছে প্রশাসন। এছাড়াও সার্বিক খোঁজ খবর নিচ্ছেন। সিটি করপোরেশন পক্ষ থেকে আলোকসজ্জা সহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সচিব আলী সাবাব টিপু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রতিবছরের মতো এবারও মেয়র ও কাউন্সিলরের নির্দেশে পরিদর্শন করে গির্জাগুলোর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন ওষুধ ছিটানো হয়েছে। তাদের প্রয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গির্জাগুলোর নিরাপত্তায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। করোনা মহামারির জন্য তারা আয়োজন সীমিত করেছেন। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, সাদা পোশাকে পুলিশ, গোয়েন্দাসহ সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবে বড়দিন উদযাপিত হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Fashion brands face criticism for failure to protect labour rights in Bangladesh

Fashion brands, including H&M and Zara, are facing criticism over their lack of action to protect workers' basic rights in Bangladesh, according to Clean Clothes Campaign (CCC)..One year after a violent crackdown by state actors and employers against Bangladeshi garment workers protesting

7m ago