৭ বছর পর ফেরা শ্রীশান্তের আকাশচুম্বী স্বপ্ন
বয়স পেরিয়ে গেছে ৩৭। নিষিদ্ধ থাকায় গত ৭ বছরে খেলা হয়নি কোন ধরণের ক্রিকেট। ক্রিকেটার শান্তকুমারন শ্রীশান্তের কথা হয়ত অনেকেই বিস্মৃতও হয়ে গেছেন। মাঝে বলিউডে অভিনয় করে নিজের আরেকটা পরিচয়ও দাঁড় করিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু এই ভারতীয় পেসার নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফিরেই দিয়েছেন বড় ঘোষণা। এই বয়েসে ঘরোয়া ক্রিকেটে আলো ছড়াতে তো চানই। ফিরতে চান ভারতীয় দলে। এমনকি ২০২৩ সালে বয়স চল্লিশ হলেও খেলতে চান বিশ্বকাপ, এমনকি জিততেও চান তা।
সম্প্রতি সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতে কেরালা দলে সুযোগ পাওয়া শ্রীশান্তের সঙ্গে গল্প করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
স্পট ফিক্সিং করে ২০১৩ সালে আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন এই ডানহাতি পেসার। পরে তার নিষেধাজ্ঞা নামিয়ে আনা হয় ৭ বছরে। গত সেপ্টেম্বরে শেষ হয়েছে এই ৭ বছরের নির্বাসনের মেয়াদ।
নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে টিভি অনুষ্ঠানে দেখা গেছে তাকে। অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রে। তার ভাষায় ‘পেট চলাতে কিছু একটা করতে হতো।’ পর্দার চাহিদাতেই নাকি ওজন ছাড়িয়েছিল একশো।
১০৬ কেজি থেকে এখন শ্রীশান্ত নেমে এসেছে ৮২ কেজিতে। ২৪ কেজি ওজন কমিয়েছেন। ফিটনেস নিয়ে খেটেছেন বিস্তর। তাতেই অনেক বড় স্বপ্ন দেখে ফেলছেন তিনি, ‘আমাদের প্রথম ম্যাচ (মুশতাক আলি ট্রফিতে) ওয়াংকেড়ে স্টেডিয়ামে। যেখানে আমি ভারতের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলেছিলাম (২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল)।’
‘কেরালা কখনো মুশতাক আলি ট্রফি জেতেনি। এবার বড় সুযোগ। আমাদের দল খুব ভালো। আমি ভীষণ রোমাঞ্চিত। কোচ তিনু ইয়োহানান আর অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন বলেছে আমার ফিরে আসা উপলক্ষে ট্রফি জিততে চায়। কিন্তু আমি এতেই থামতে চাই না। ইরানি ট্রফি, রঞ্জি ট্রফিতে পারফর্ম করতে চাই।’
আইপিএলের দল থেকেও তার উপর নজর রাখা হচ্ছে, ‘আইপিএলের দলগুলো আমার খবর নিচ্ছে।’
এখনি নাকি ঘণ্টায় ১৩৫-১৪৫ কিমি গতি তুলতে পারছেন, এমনকি ভোর রাতে ঘুম ভাঙলেও নাকি করতে পারবেন স্যুয়িং, ‘আমি ১৩৫-১৪৫ কিমিতে বল করছি। দরকার হলেও ১৪০ তুলতে পারব। এখনো ভোর তিনটায় উঠেও আউটস্যুয়িং, ইনস্যুয়িং, ইয়র্কার মারতে পারব।’ এই পেসার জানান কোচ টি শেখর তাকে বলেছেন ২০০৭ সালের মতোই ফুরফুরে দেখাচ্ছে তাকে!
এত লম্বা বিরতির পর শ্রীশান্তের ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করাই বড় ঘটনা হতে পারত। কিন্তু তার স্বপ্ন রীতিমতো আকাশচুম্বী, ‘এটা ঠিক খেলাধুলায় একটা বয়সের পর আর কিছু অর্জনের থাকে না। কিন্তু লিওন্ডার পেজকে দেখেন ৪২ বছর বয়েসে গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন। রজার ফেদেরার আরেক উদাহরণ। মিসবাহ-উল হক, ব্র্যাড হগ, শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়রা দেখিয়েছেন এই বয়েসেও কত কিছু করা যায়।’
তাকে যখন মনে করিয়ে দেওয়া হলো এদের কেউ পেসার নন, তখন ইতিহাস গড়ার ঘোষণা দেন শ্রীশান্ত, ‘ফাস্ট বোলার হিসেবে আমি ইতিহাস তৈরি করব তাহলে। আমি ইতিহাস তৈরি করতে ভালোবাসি। আমার আসল লক্ষ্য ২০২৩ বিশ্বকাপ খেলা এবং সেটা জেতা।’
তিন সংস্করণ মিলিয়ে ভারতের হয়ে ৯০ ম্যাচ খেলেছেন বর্ণময় এই চরিত্র।
Comments