রাহানের সেঞ্চুরিতে ভারতের বড় লিড

মিচেল স্টার্কের শরীর তাক করা বাউন্সার আজিঙ্কা রাহানের গ্লাভসে লেগে ক্যাচ উঠেছিল গালিতে। কিন্তু তা জমাতে পারেননি ট্রেভিস হেড। থামাতে পারেননি এর আগে দারুণ সেঞ্চুরি করা রাহানেকে। ওই বলের পরই বৃষ্টিতে আগেভাগে শেষ হয় দিনের খেলা। যাতে অস্ট্রেলিয়ার এমন সুযোগ হাতছাড়ার ছবি আর আর ভারতের চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তা হয়ে থাকল পুরো দিনের চিত্রপট।
মেলবোর্নে রোববার বক্সিং ডে টেস্টের দ্বিতীয় দিন পুরোটাই ভারতের। ৫ উইকেটে ২৭৭ রান নিয়ে দিন শেষে করেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়া থেকে এগিয়ে গেছে ৮২ রানে।
১০৪ রানে ব্যাট বিপক্ষে স্রোতে লড়ে দৃঢ়তা দেখানো রাহানে। তার সঙ্গে ১০৪ রানের ম্যাচ ঘুরানো জুটি গড়ে ৪০ রানে অপরাজিত অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা।
আগের দিন ওপেনার শুভমান গিলের ক্যাচ ৪ রানে স্লিপে ফেলে দিয়েছিলেন মারনাশ লাবুশানে। অভিষিক্ত গিল দ্বিতীয় দিনের সকালটা কাজে লাগান ভালোভাবেই। নিজের প্রথম টেস্ট ইনিংস ফিফটির কাছে নিয়ে করেছেন গড়বড়। ৪৫ রান করে প্যাট কামিন্সের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন উইকেটের পেছনে।
ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে থাকা চেতশ্বর পূজারও ফিরে যান পর পরই। দ্রুত ২ উইকেট খুইয়ে থতমত ভারত ঘুরে দাঁড়ায় রাহানে-হনুমা বিহারি জুটিতে।
অনেকটা সময় দিনে চতুর্থ উইকেটে ৫২ রান যোগ করেন তারা। অতি সতর্ক ব্যাট করতে দেখা যায় দুজনকেই। অফ স্পিনার ন্যাথান লায়ন এসে ফেরান ২১ করা বিহারিকে।
এরপর কিপার ব্যাটসম্যান রিশভ পান্ত কিছুটা ওয়ানডে মেজাজ নিয়ে নেমেছিলেন। রান বাড়ছিল দ্রুত। আরেকটি পঞ্চাশ (৫৭) জুটি পেয়ে যায় ভারত। কিন্তু অ্যাপ্রোচটাই গোলমাল করে দেয় পান্তের (২৯)। স্টার্কের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে দেন ক্যাচ। স্টার্ক নেন ২৫০তম টেস্ট উইকেট। ওই ক্যাচ ধরে দ্রুততম ১৫০ ডিসমিসালের রেকর্ড গড়েন পেইন। ছাড়িয়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টেন ডি কককে।
বাকি দিনে আর কোন সাফল্য নেই স্বাগতিক পেসারদের। শেষ সেশনে একটাও উইকেট হারায়নি ভারত, তুলে নেয় ৮৮ রান। ২০১৮ সাল থেকে টেস্টে পঞ্চাশের উপর গড় নিয়ে খেলা জাদেজা বোঝান নিজের ব্যাটিং সামর্থ্য। তাড়াহুড়ো করেননি একদম। আবার ক্রিজে কুঁকড়েও যাননি।
তার ইতিবাচক অ্যাপ্রোচে বদলে যায় ম্যাচের ছবি। জুটি জমে উঠতে থাকে। লিড বাড়তে থাকে। বিফল হতে থাকে অজিদের নানান চেষ্টা। নতুন বলেও স্বচ্ছন্দ দেখা গেছে জাদেজাকে। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে বরাবররের মতই ক্ষিপ্র ছিলেন। অজি পেসারদের থিতু হতে দেননি একদম।
তাকে পেয়ে ছন্দময় দেখা গেছে রাহানেকে। দৃঢ়তার ছবি হয়ে থাকা রাহানেও সুযোগ পেলেই বল পাঠাতে থাকেন বাউন্ডারিতে। তবে নতুন বলে সেঞ্চুরির আগেই ফিরে যেতে পারতেন তিনি। স্টার্কের বলে আশির ঘরে স্লিপে তার অনেকটা সহজ ক্যাচ ফেলে দেন স্টিভেন স্মিথ। সুযোগ পেয়ে অনায়সে দ্বাদশ সেঞ্চুরি তুলে নেন রাহানে। বিরাট কোহলির অবর্তমানে নেতৃত্ব পাওয়া এই ডানহাতি দলকে দিচ্ছেন বড় স্বপ্ন।
অন্যদিকে এক ইনিংসে তিনটি ক্যাচ হাতছাড়া করার মাশুল অস্ট্রেলিয়াকে কীভাবে দিতে হয়, বোঝা যাবে তৃতীয় দিনে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(দ্বিতীয় দিন শেষে)
Comments