পাকিস্তানি কিংবদন্তি পেসারদের স্কিল এখন বুমরাহর কব্জায়: শোয়েব
ছোট্ট রানআপেও বিস্ময়কর গতি, নিখুঁত লেন্থে বল করা, স্যুইংয়ের মায়াজাল বিছিয়ে দেওয়া মিলিয়ে জাসপ্রিট বুমরাহ এক আকর্ষণীয় নাম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দারুণ সফল এই ভারতীয় পেসারের স্কিল আর বুদ্ধিতে মজেছেন সাবেক পাকিস্তানি গতিতারকা শোয়েব আখতার। তার মতে পাকিস্তানি কিংবদন্তি পেসারদের স্কিল এখন বুমরাহর মাঝে পাওয়া যায়।
একটি ইউটিউব চ্যানেলের আলোচনায় বুমরাহ প্রসঙ্গে নিজের মুগ্ধতা প্রকাশ করার পাশাপাশি বিশদ ব্যাখ্যাও দিয়েছেন শোয়েব।
কম রান আপ নিয়েও ঘণ্টায় ১৪৫ কিমি গতিতে বল করে তাক লাগান বুমরাহ। শোয়েব জানান, ভারতের ইতিহাসে বুমরাহই প্রথম কেউ যিনি বাতাস কাজে লাগাতে জানেন, ‘ভারতের পেসারদের মধ্যে বুমরাহই প্রথম যে উইকেটে কতটা ঘাস তা দেখার আগে দেখে বাতাস কোনদিক থেকে বইছে। কতটা জোরে বইছে। এটা আমরা পাকিস্তানি পেসাররা করতাম। আমরা জানতাম বাতাস নিয়ে খেলা করা যায়।’
‘ওয়াসিম, ওয়াকার, আমি বোঝার চেষ্টা করতাম বাতাস কোনদিকে বইছে। বাতাসের গতিপথ আর গতি বুঝে বল করতাম। বুঝে নিতাম কোন দিক থেকে রিভার্স স্যুইং পেতে পারি।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান সিরিজে দুই টেস্টে বুমরাহ নিয়েছেন ১০ উইকেট। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্যাটসম্যানরা কাবু হয়েছেন তার স্কিলে। শোয়েবের মতে স্কিলের সঙ্গে বুদ্ধিতেও এগিয়ে তিনি, ‘বল স্যুইং করার পেছনে যে বিজ্ঞান কাজ করে বর্তমান বিশ্বের বেশিরভাগ বোলার এটা জানে বলে মনে হয় না। বুমরাহ এই জিনিসগুলো জানে। গত কয়েকবছরে মোহাম্মদ আসিফ, মোহাম্মদ আমিরের পর আমার দেখা সবচেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত বোলার বুমরাহ।’
‘বর্তমানে ক্রিকেটে দারুণ এক চরিত্র বুমরাহ। যদি ওর ফিটনেস ঠিক থাকে, কোমর যদি ঠিক থাকে দুর্দান্ত এক পেসারকে বহুদিন দেখব আমরা।’
একটি ব্যতিক্রমী অ্যাকশন থাকায় বুমরাহর সাফল্য নিয়ে অনেকেই ছিলেন সন্দিহান। কিন্তু নিজের ভিন্ন ধর্মী অ্যাকশন ভরসা করেই এগিয়েছেন বুমরাহ। প্রথম বোলার হিসেবে ঘণ্টায় ১০০ মাইল গতিতে বল করে রেকর্ড গড়া শোয়েব দেখছেন মানুষের ভুল চিন্তা সরিয়ে কেবল এগিয়েই যাচ্ছেন ২৭ বছর বয়েসী ভারতীয় পেসার, ‘মানুষ ওর যত সমালোচনা করেছে ও তত ভাল করেছে। ওর অ্যাকশন অনেকে ত্রুতিপূর্ণ বলতে চেয়েছে, তাদের মুখের উপর সে দেখিয়েছে সে কী করতে পারে।’
‘ও যে করিডরে বল ফেলে সামান্য এদিক-ওদিক করেই ভড়কে দেয় ব্যাটসম্যানদের। টানা ৬০টা বলও এক জায়গায় ফেলতে পারবে, এত নিয়ন্ত্রণ তার।’
‘ওভার দ্য উইকেটে বল করতে এলেও স্টাম্পের গা ঘেঁষে দারুণ বৈচিত্র্য নিয়ে আসে। ভেতরে ঢুকায়, বের করে। বিভ্রান্ত করে সুয়িংয়ে। কারণ বল পড়ার আগে বোঝা যায় না কোনদিকে যাবে।’
৬৭ ওয়ানডেতে ১০৮ উইকেট, ১৬ টেস্টে ৭৬ উইকেট, ৫০ টি-টোয়েন্টিতে ৫৯ উইকেট। বুমরাহ ছুটছেন বড় কিছুর দিকেই। শোয়েব মনে করেন উইকেট নেওয়ার শিল্প এখন বুমরাহর হাতে,‘ও এমন একজন যাকে ঘুম থেকে তুলে বল করতে নামালেই ঠিক জায়গায় বল ফেলবে। বুমরাহ উইকেট নেওয়ার শিল্প আয়ত্ত করে ফেলেছে।’
Comments