আশ্বস্ত থাকতে পারি, আমরা চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন পাব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভারতের ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘যতটুকু আমাদের আলোচনা হয়েছে, সেই আলোচনা অনুযায়ী আমরা এখনো আশ্বস্ত থাকতে পারি যে, আমরা হয়তো আমাদের চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন পাব।’
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বেক্সিমকোর সঙ্গে ইতোমধ্যে আমাদের আলোচনা হয়েছে। পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবার ভারতের মিশনের সঙ্গে আলাপ করেছে। এবং আমাদের মিশন ভারতীয় পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও আলোচনা করেছে। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, যে চুক্তিটি হয়েছে, সেটি ব্যাহত হবে না। ভারত সরকার জরুরি অনুমোদন দিয়েছে তাদের দেশে কিছু প্রয়োগ করার জন্য। যেটার কাজ শুরু হয়েছে। একটি নিষেধাজ্ঞার কথা আপনারাও জেনেছেন, আমরাও অতটুকুই জেনেছি। তারা সকল দেশের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যে, আগে ভারকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তারপর অন্য দেশে যাবে।’
‘আমরা এ বিষয় নিয়ে এতগুলো জায়গায় আলোচনা করেছি। আমরা আশ্বস্ত যে এটা কোনো সমস্যা হবে না। সমাধান আমরা আশা করি হয়ে যাবে। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের চুক্তি যেটা, আপনারাও জানেন, সেই চুক্তি অনুযায়ী, তাদের ভ্যাকসিন যখন অনুমোদন পাবে, ডব্লিউএইচওর অনুমোদনও তারা নেবে। ডব্লিউএইচওর অনুমোদনের পরে তারা আমাদেরকে ভ্যাকসিন দিতে পারবে। এটা আমাদের চুক্তিতেও আছে। তারা এখন তাদের সরকারের অনুমোদন পেয়েছে। এখন তারা ডব্লিউএইচওর কাছে আবেদন করবে এবং আবেদনের প্রেক্ষিতে আশা করব তারা অনুমোদনও তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবে। অনুমোদন পাওয়ার পরে তারা আবারও আমাদেরকে জানাবে যে, আমরা কবে পাব। আমরা আশা করি, যতটুকু আমাদের আলোচনা হয়েছে, সেই আলোচনা অনুযায়ী আমরা এখনো আশ্বস্ত থাকতে পারি যে, আমরা হয়তো আমাদের চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন পাব।’
একই সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান জানান, এ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। ‘ভ্যাকসিন সঠিক সময়ে এসে পৌঁছাবে’, যোগ করেন সচিব।
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের চুক্তিটিও একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। সেই চুক্তিতে সম্মান করার একটা বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটার ওপর আস্থা রাখি। একইসঙ্গে সকাল থেকে আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব হয়েছে আমরা আলোচনা করেছি। সেটা আগেও বললাম। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা আবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছে। আমাদের বেক্সিমকোর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমাদের দেশে যিনি ভারতের অ্যাম্বাসেডর আছেন, তার সঙ্গেও আলোচনা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। সব বিষয়ে আমরা আশাবাদী। তারা কেউ নেতিবাচকভাবে বলেননি। তারা আমাদেরকে বলেছে, আপনারা আশাহত হবেন না। যেহেতু ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বসূলভ একটা সম্পর্ক আছে, দীর্ঘদিনের সম্পর্ক, সেই হিসেবে বাংলাদেশের চুক্তি অনুযায়ী আপনারা আপনাদেরটা পাবেন। এইটুকু আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে।’
ভারতে থেকে পাওয়ার প্রত্যাশা নয়, বাংলাদেশের কোনো বিকল্প পরিকল্পনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের তো চুক্তি আছে। তাই প্রত্যাশা নয়, আমরা চুক্তি সই করেছি। সেই চুক্তির ভিত্তিতে আমরা কথা বলি। এখন যেহেতু একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। সে সমস্যাটা আমাদের পক্ষ থেকে দেখা দেয়নি। যেখান থেকে আমরা আনব, সেখানকার একটা সমস্যার কথা আসছে। আমরা আলোচনা করে যতটুকু পেয়েছি, সেই অনুযায়ী আমরা আপনাদেরকে জানিয়েছি, আশ্বস্ত করছি। এর বেশি জানি না। কাজেই যখন আবারও কোনো ডেভেলপমেন্ট হবে, তখন সেটা আপনাদেরকে জানাব। সব সময়ে যখনই ভ্যাকসিন বিষয়ে যে ডেভেলপ আমরা করেছি, আপনাদেরকে আমরা অবহিত করে আসছি। আগামীতেও আমরা জানাব।’
ভ্যাকসিন কবে নাগাদ আসতে পারে, জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেকথা তো এখনই বলতে পারব না। কারণ, এখন নতুন একটা সমস্যা সামনে আসলো। এটা তো গতকালও ছিল না। এখন আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। কাজ করে যখনই যে ডেভেলপমেন্টটা আসবে, সেটা আমরা জানিয়ে দেবো।’
বিকল্প পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেগুলোও হাতে আছে। যেমন: চীনা ভ্যাকসিন, রাশিয়ান ভ্যাকসিন, এগুলো তো আমাদের হাতে আছে।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশ যথাসময়েই ভ্যাকসিন পাবে: বেক্সিমকো
ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
ভারতে কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন অনুমোদন
ভারতে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের অনুমোদন বাংলাদেশের জন্যেও সুসংবাদ
ভারতে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ব্যবহারের পক্ষে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ
যুক্তরাজ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন
যুক্তরাজ্যে ৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে পারে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন বিতরণ
যুক্তরাজ্যে প্রথম করোনার ভ্যাকসিন পেলেন ৯০ বছরের নারী
চীনের ভ্যাকসিন কবে আসবে ‘নিশ্চিত নয়’
অনুমোদন পেল ফাইজারের ভ্যাকসিন
‘অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পেতে কমপক্ষে আরও ২-৩ মাস সময় লাগবে’
Comments