নোয়াখালীতে অনাবাদী প্রায় ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ

চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে নোয়াখালী জেলার নয়টি উপজেলায় ধান চাষ বেড়েছে। পৌষের তীব্র শীত উপেক্ষা করে কাক ডাকা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কৃষকরা মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
নোয়াখালীতে ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ছবি: স্টার

চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে নোয়াখালী জেলার নয়টি উপজেলায় ধান চাষ বেড়েছে। পৌষের তীব্র শীত উপেক্ষা করে কাক ডাকা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কৃষকরা মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধি, সেচ ও লবণাক্ততার কারণে জেলায় ৯০ হাজার হেক্টর কৃষি জমি অনাবাদী থেকে যেত। এর মধ্যে চলতি মৌসুমে ৬৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমি ইরি-বোরো চাষের আওতায় আনা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ পাঁচ হাজার ৬১০ মেট্রিক টন।

নোয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার সদর, চাটখিল, সোনাইমুড়ী, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর ও হাতিয়া উপজেলায় ৬৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমি ইরি-বোরো চাষের আওতায় আনা হয়েছে।

এর মধ্যে হাইব্রিড ধান চাষ করা হচ্ছে ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন। বাকি ১৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হচ্ছে উফশী ধান। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার ৬১০ মেট্রিক টন।

চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের লটপটিয়া গ্রামের কৃষক আবদুর রহমান দত্তেরবাগ গ্রামের হারুনুর রশিদ, পৌরসভার সুন্দরপুর এলাকার নুর মোহাম্মদ, সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশা পাড়া ইউনিয়নের তথারখিল গ্রামের কৃষক সামছুল হক, আলমগীর ভূঁইয়া, সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের কৃষক আবদুর রশিদ আমজাদ হোসেন, আবদুর রহমানসহ অনেক কৃষক বলেন, এখন ইরি-বোরো চাষের ভরা মৌসুম। কাক ডাকা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত তারা মাঠে ধান চাষ ও জমি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখন শ্রমিকদের তীব্র অভাব। জ্বালানী তেল, সার ও শ্রমিক মজুরির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে ধান উৎপাদনে তাদের খরচ অনেক বেড়ে যাবে।

৬৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে জেলার ৮৬ জন বিসিআইসি সার ডিলার ও ৬১ জন বিএডিসি সার ডিলারের মাধ্যমে জানুয়ারি মাসে তিন হাজার ৫১৯ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তিন হাজার ৩০৩ মেট্রিক টন ইউরিয়া, ৯৪২ মেট্রিক টন টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট), ৬৯০ মেট্রিক টন এমওপি (ম্যাগনেসিয়াম অব ফসফেট) ও ১ হাজার ৫২ মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট)।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নোয়াখালীর উপ-পরিচালকের দায়িত্বে থাকা থানা জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আইয়ুব মাহমুদ বলেন, ‘নোয়াখালীর চাটখিল, সোনাইমুড়ি, বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, সূবর্ণচর, সেনবাগ, সদর ও হাতিয়া উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে মোট মোট তিন হাজার ৫১৯ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশা করি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি বছর কৃষি উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত হবে।’

Comments