জর্জিয়ায় সিনেট নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই
যুক্তরাষ্ট্রে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সিনেট নির্বাচনে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতো এবারেও ডেমোক্রেট নাকি রিপাবলিকান— এ প্রশ্নে জর্জিয়ানরা সমানভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, জর্জিয়ার সিনেট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী কেলি লফলারের বিপরীতে লড়ছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী আটলান্টার ঐতিহাসিক কৃষ্ণাঙ্গ গির্জার যাজক রাফায়েল ওয়ার্নক। অন্যদিকে রিপাবলিকান ডেভিড পের্ডুর বিপরীতে লড়ছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র নির্মাতা জন অসফ।
ভোটগণনা চলাকালীন মুহূর্তের মধ্যেই কখনো রিপাবলিকান আবার কখনো বা ডেমোক্রেটদের এগিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
অ্যাডিসন রিসার্চ জানায়, প্রায় ৯৬ শতাংশ প্রত্যাশিত ভোটই ইতোমধ্যে জমা পড়েছে। সেসব ভোটের শুরুতে ডেমোক্রেট প্রার্থী ওয়ার্নকের চেয়ে এক শতাংশেরও কম পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন রিপাবলিকান লফলার। অন্যদিকে, ডেমোক্রেট অসফের চেয়ে এক দশমিক চার শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে ছিলেন রিপাবলিকান পের্ডু।
তবে, ডেমোক্রেটদের ঘাঁটি ডেকালব কাউন্টির ভোটগণনার পরই ডেমোক্রেট ওয়ার্নক রিপাবলিকানদের চেয়ে কিছু পয়েন্টে এগিয়ে গেছেন। আর পের্ডু ও অসফ দুজনই এখন সমান পয়েন্টে রয়েছেন।
সিএনএনের সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ডেমোক্রেট ওয়ার্নক ৫০ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। এর বিপরীতে রিপাবলিকান লফার পেয়েছেন ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট।
অন্যদিকে, রিপাবলিকান ডেমোক্রেট পের্ডু পেয়েছেন ৫০ শতাংশ ভোট, এর বিপরীতে ডেমোক্রেট প্রার্থী অসফও পেয়েছেন ৫০ শতাংশ।
জর্জিয়ায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্যে যেকোনো দলেরই জয় হতে পারে বলে জানিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা।
নির্বাচনের আগেই ৩০ লাখেরও বেশি জর্জিয়ান মেইল ইন বা স্বশরীরে আগাম ভোট দিয়েছেন।
গত ৩ নভেম্বর থেকে দুই দলের নির্বাচনী প্রচারণায় টেলিভিশন বিজ্ঞাপন ব্যয়ে প্রায় অর্ধ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়। জর্জিয়ার সিনেট নির্বাচনকে ঘিরে বাইডেন ও ট্রাম্প উভয়ই সোমবারের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন।
জর্জিয়ার নির্বাচনের ওপরই সিনেটের নিয়ন্ত্রণ কাদের হাতে যাবে, তা নির্ভর করছে। কংগ্রেসের উভয় কক্ষেরই নিয়ন্ত্রণ পেতে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ডেমোক্রেটিক পার্টিকে দুটি আসনেই জিততে হবে। অন্যদিকে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টিকে একটি আসনে জিততে হবে।
ট্রাম্পের ইচ্ছা, সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান দলের প্রার্থীরা জয়ী হয়ে যেন বাইডেনের কর্মসূচিগুলো আটকাতে পারেন।
রিপাবলিকানরা সিনেটে জয় পেলে তারা কার্যকরভাবেই বাইডেনের কর্মসূচিগুলো আটকে দিতে পারবেন। অর্থনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্যসেবা ও ফৌজদারি ন্যায়বিচারের মতো অনেক আইনি উদ্যোগের ওপর ভেটো শক্তি প্রয়োগ করতে পারবেন।
দীর্ঘদিন ধরেই রিপাবলিকান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত জর্জিয়ায় নভেম্বরের নির্বাচনে বাইডেন জয়ী হওয়ায় সবাই বেশ অবাক হয়েছিলেন। ১৯৯২ সালের পর গত বছর প্রথমবারের মতো রাজ্যটিতে কোনো ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিতেছেন।
জর্জিয়ায় গত ২০ বছরের মধ্যে কোনো ডেমোক্রেট সিনেট নির্বাচনে জিততে না পারলেও এ বছর তা ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা আছে বলেও মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
Comments