২০২০ সালে গড় মুদ্রাস্ফীতি ৫.৬৯, ৩ বছরে সর্বোচ্চ

২০২০ সালের বেশিরভাগ সময় খাদ্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকায় সদ্য বিদায়ী বছরে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে পাঁচ দশমিক ৬৯ শতাংশে। যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

গত ডিসেম্বরে গড় ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) নেমেছে পাঁচ দশমিক ২৯ শতাংশে। যা শেষ ৪৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ডিসেম্বরের এই পরিসংখ্যান নভেম্বরের সিপিআইয়ের তুলনায় ২৩ বেসিক পয়েন্ট কম। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে এটিই সর্বনিম্ন।

ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আগের মাসের তুলনায় শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ পয়েন্ট কমে পাঁচ দশমিক ৩৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

খাদ্য নয় এমন পণ্যের মূল্যস্ফীতি ১৯ বেসিক পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ দশমিক ২১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বন্যা ও বৃষ্টিপাতে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চাল ও সবজির দাম বাড়ায় গত জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে।

নভেম্বর থেকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমতে পেতে শুরু করায় সাধারণ মূল্যস্ফীতিও কমে।

ডিসেম্বরে চালের দাম কিছুটা বাড়লেও কমেছে অন্যান্য খাদ্যপণ্যের দাম।

বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক শীর্ষ অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘এটি সাধারণ মুদ্রাস্ফীতির ওপর বেশ প্রভাব ফেলেছে।’

‘মুদ্রাস্ফীতিকে আর্থিক লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখার জন্য সতর্কতা বজায় রাখা জরুরি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত এর জন্য নজরদারি চালিয়ে যাওয়া।’

বিবিএসের তথ্যে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে মোটা চালের দাম কিছুটা বেড়ে ৫২ টাকা ২৮ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। এক মাস আগেও ঢাকার বাজারে এর দাম ছিল ৫২ টাকা ২৩ পয়সা।

নাজিরশাইল/মিনিকেট ও পাইজাম চালের দাম হয়েছে যথাক্রমে ৬৮ টাকা ২০ পয়সা এবং ৬৬ টাকা ৩০ পয়সা। নভেম্বরে এই দুই ধরনের চালের দাম ছিল যথাক্রমে ৬৮ টাকা এবং ৬৫ টাকা ৬৮ পয়সা।

বাজারে মুগডালের দাম ১৩৫ টাকা থেকে কমে ১৩৪ টাকা ৩০ পয়সা এবং মসুরের ডালের দাম ১২৫ টাকা থেকে কমে ১২২ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে।

বিবিএস জানিয়েছে, ভালো মানের সয়াবিন তেলে প্রতি লিটারে দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা ১৩ পয়সা।

শুকনা মরিচের দাম ৩৯০ টাকা থেকে কমে ৩৮০ টাকা হয়েছে। গত অর্থবছরে এর গড় মূল্য ছিল ২৩৫ টাকা।

পেঁয়াজের দাম নভেম্বর মাসের চেয়ে কেজিতে সাত টাকা ৫১ পয়সা কমে ৮০ টাকা ৭০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে।

বিবিএস জানিয়েছে, গ্রামীণ অঞ্চলে মূল্যস্ফীতি নভেম্বরের চেয়ে শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ পয়েন্ট কমে পাঁচ দশমিক ২৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

খাদ্য মূল্যস্ফীতি শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ পয়েন্ট কমে পাঁচ দশমিক ৬০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এবং খাদ্য নয় এমন পণ্যের মূল্যস্ফীতি ২৪ বেসিক পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে চার দশমিক ৬৭ শতাংশ।

শহুরে মূল্যস্ফীতি ৪৪ বেসিক পয়েন্ট কমে পাঁচ দশমিক ৩১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি এক দশমিক শূন্য সাত শতাংশ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে চার দশমিক ৭৭ শতাংশে।

বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, ডিসেম্বরে শহরাঞ্চলে খাদ্য নয় এমন পণ্যের মূল্যস্ফীতি ২৯ বেসিক পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ দশমিক ৯৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

সরকার চলতি অর্থবছরে মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে পাঁচ দশমিক চার শতাংশ।

Comments

The Daily Star  | English
Health Sector Reform Commission submits report to Yunus

Reform commission for universal primary healthcare

Also recommends permanent independent commission to govern heath sector

3h ago