কাঠের সেতুটি ৮ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা

গত বছরের জুলাইয়ের প্রথম দিকে দুধকুমার নদের বন্যার পানিতে ভেসে যায় মেঠো রাস্তার একটি অংশ। এতে বন্ধ হয়ে যায় আটটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের চলাচল। এক সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয়রা নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন ভাঙা অংশে। বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে মানুষ চলাচল করলেও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
তবে, সেখানে একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে প্রায় আড়াই লাখ টাকা ব্যয় একটি কাঠের সেতু নির্মিত হয়েছে। সেতুটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সম্প্রদায় সেতু’। বর্তমানে সম্প্রদায় সেতুটি হয়ে উঠেছে দুই পারের মানুষের চলাচলের ভরসা ও আস্থা।
আরাজি কদমতলা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তাদের চলাচলের সমস্যায় নিয়ে নিরুপায় হয়ে পড়েছেন। বেসরকারি সংস্থার দ্বারস্থ হয়ে সহযোগিতার আবেদন জানানো হয়। পরে বেসরকারি সংস্থাটির সহায়তায় রাস্তার ভাঙা অংশে তৈরি হয় একটি কাঠের সেতু। আর এ সেতুটি এখন তাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা।
স্টার্ট ফান্ড বাংলাদেশের আর্থিক সহায়তায় বেসরকারি সংস্থা ইকো সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ পুট প্রশ্বস্ত একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করেছে রাস্তার ভেঙে যাওয়া অংশে। এ সেতুটি তৈরি করতে প্রায় আড়াই লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। সেতুটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সম্প্রদায় সেতু’। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এ সেতু দিয়ে গ্রামবাসী চলাচল শুরু করেন। শুধু গ্রামবাসী চলাচল করছেন তা নয়। এ সেতুর উপর হালকা যানবাহন চলাচল করছে। মালবোঝাই ঘোড়ার গাড়ি চলছে অহরহ।
আরাজি কদমতলা গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম (৫৮) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কাঠের সেতুটি আমাদের অনেক উপকারে লাগছে। এ সেতুর কারণে আমরা নিরাপদে চলাচল ও মাল আনা নেওয়া করতে পারছি। তবে, রাসস্তার ভাঙা অংশে কংক্রিটের সেতু নির্মাণ করা জরুরি। কারণ, কাঠের সেতুটি বেশিদিন টিকবে না।’
মোল্লারহাট এলাকার ঘোড়ার গাড়ি চালক বদিয়ার রহমান (৪৪) জানান, প্রায় আড়াই মাস তারা ঘোড়ার
গাড়িতে মালামাল পরিবহন করতে পারেননি। কাঠের সেতুটি হওয়ার পর থেকে তারা মালামাল আনা নেওয়া করছেন। এটি তাদের উপকারে লাগছে, কিন্তু তাদের দাবি একটি কংক্রিটের সেতু।
স্থানীয় পাঁচগাছি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাসেন আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আরাজি কদমতলা গ্রামে রাস্তার ভাঙা অংশে কংক্রিটের সেতু নির্মাণের কথা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এলজিইডির প্রকৌশলী স্থানটি পরিদর্শন করেছেন।’
পাঁচগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন জানান, চলতি অর্থবছরে আরাজি কদমতলায় একটি কংক্রিটের সেতু নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। বর্তমানে বেসরকারি সংস্থার তৈরি করা কাঠের সেতু দিয়ে গ্রামের মানুষ চলাচল করছে। সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মেরামত করার ব্যবস্থা করা হবে।
Comments