ফর্ম হারানো ও রানখরার মধ্যে পার্থক্য আছে: স্মিথ

আগের চার ইনিংসে মাত্র ১০ রান। সবশেষ ১৪ ইনিংসে নেই কোনো সেঞ্চুরি। স্টিভেন স্মিথকে নিয়ে তাই উঠতে শুরু করেছিল ‘গেল গেল রব’। সমালোচনার ঝাপটা টের পেলেও তিনি এতদিন ছিলেন মুখ বুজে, অপেক্ষা করছিলেন মোক্ষম জবাব দেওয়ার সুযোগের। ভারতের বিপক্ষে সিডনি টেস্টে এসে গেল কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। নান্দনিক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তা-ই বুনো উদযাপনই করলেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা ব্যাটসম্যান।
শুক্রবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৩৮ রানে অলআউট হয়েছে স্বাগতিকরা। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে রানআউটে কাটা পড়ার আগে স্মিথ খেলেন ১৩১ রানের ঝলমলে ইনিংস। ২২৬ বলের ইনিংসে ১৬টি চার মারেন তিনি।
১৯৬ ডেলিভারিতে ব্যক্তিগত ৯৯ রানে পৌঁছে যান স্মিথ। এরপর ওই রানে আটকে থাকেন অনেকটা সময়। নবদ্বীপ সাইনির করা ইনিংসের ৯৮তম ওভারের শেষ বলটি স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে স্মিথ যখন সেঞ্চুরি পূরণ করেন, ততক্ষণে কেটে যায় প্রায় ২০ মিনিট!
ঠাণ্ডা মাথায় ব্যাটিং করতে পটু স্মিথের উদযাপনেও থাকে পরিমিতিবোধ। কিন্তু বাজে সময় পেছনে ফেলার আনন্দে হোক কিংবা স্বস্তিতে- তিনি করেন আগ্রাসী উল্লাস। সাজঘরের দিকে ঘুরে ব্যাট ঘুরিয়ে ছুঁড়ে মারার ইঙ্গিত করেন স্মিথ, হেলেমেটে চুমু খান এবং বিজয়ীর ভঙ্গিতে দুহাত উপরের দিকে তুলে ধরেন।
৪৯০ দিন পর তিন অঙ্কের স্বাদ নেওয়া স্মিথ পরে আমেরিকান গণমাধ্যম ফক্স স্পোর্টসকে জানান, সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার আনন্দও হচ্ছে তার, ‘আমার ফর্ম হারানো নিয়ে অনেকের অনেক কথাই পড়লাম। তবে আমার মনে হয়, ফর্ম হারানো ও রানখরার মধ্যে পার্থক্য আছে। তাই কিছু রান করতে পেরে ভালো লাগছে। কারণ, কিছু লোককে হয়তো চুপ করাতে পেরেছি।’
সবমিলিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৭তম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন ৩১ বছর বয়সী স্মিথ। ভারতের বিপক্ষে এটি তার অষ্টম সেঞ্চুরি। টেস্টে ভারতীয়দের বিপক্ষে এতগুলো সেঞ্চুরি আছে আর কেবল তিন ক্রিকেটারের। তারা হলেন- ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্যার ভিভ রিচার্ডস ও স্যার গ্যারি সোবার্স এবং অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং।
ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে সবচেয়ে কম সময়ে ২৭টি সেঞ্চুরি করার কীর্তি রয়েছে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের দখলে। মাত্র ৭০ ইনিংস লেগেছিল সাবেক অজি তারকার। প্রায় দ্বিগুণ সময় লাগলেও তার ঠিক পেছনেই জায়গা করে নিলেন স্মিথ! ২৭ সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে তার লাগল ১৩৬ ইনিংস। এরপর যৌথভাবে অবস্থান করছেন ভারতের বিরাট কোহলি ও শচীন টেন্ডুলকার (১৪১ ইনিংস)।
Comments