আর্সেনালে যোগ দেওয়া নিয়ে আফসোস নেই ওজিলের

সেরা সময় পেছনে ফেলে আসা মেসুত ওজিলের নতুন ঠিকানা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। আর্সেনালের চলতি মৌসুমের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও ইউরোপা লিগের স্কোয়াডে তাকে রাখেননি কোচ মিকেল আর্তেতা। তবে লন্ডনের ক্লাবটিতে যোগ দেওয়া নিয়ে কোনো আফসোস নেই জার্মান এই মিডফিল্ডারের।
২০১৩ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে আর্সেনালে নাম লেখান ওজিল। শুরুতেই গানার্সদের হয়ে দারুণ সাফল্য উপভোগ করেন তিনি, জেতেন এফএ কাপ ও কমিউনিটি শিল্ডের শিরোপা। ২০১৫-১৬ মৌসুমে ক্লাবের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও ওঠে তার গলায়।
সেবার প্রিমিয়ার লিগে সতীর্থদের দিয়ে ১৯ গোল করানোর পাশপাশি ২৮টি বড় সুযোগ তৈরি করেছিলেন ওজিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দলে তার প্রভাব ক্রমেই কমতে কমতে একবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ইংল্যান্ডের শীর্ষে লিগের গত চার মৌসুমে তার অ্যাসিস্ট সংখ্যা যথাক্রমে নয়, আট, দুই ও দুই।

আর্সেনালের বর্তমান স্প্যানিশ কোচ আর্তেতা দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম ১৬ ম্যাচের ১২টিতেই খেলেন ওজিল। কিন্তু একাদশে জায়গা ধরে রাখতে পারেননি ২০১৮ বিশ্বকাপের পর জার্মান জাতীয় দল থেকে অবসরে যাওয়া এই ফুটবলার, যিনি স্কিল ও দক্ষতার কারণে খ্যাতি পেয়েছেন।
করোনাভাইরাস বিরতির পর গত জুনে ইংল্যান্ডে ফের ফুটবল ফিরলেও আর্তেতার পরিকল্পনা থেকে একেবারে মুছে গেছে ওজিলের নাম। তাই ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই অন্য কোনো ক্লাবে পাড়ি জমাবেন তিনি। এই আলোচনায় এগিয়ে রয়েছে তার পূর্বপুরুষদের জন্মস্থান তুরস্কের ক্লাব ফেনারবাচের নাম।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে ভক্ত-সমর্থকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা জানান, বিগত কয়েকটি মাস কঠিন কাটলেও আর্সেনালে থাকার সময়টা ভীষণ আনন্দ দিয়েছে তাকে, ‘অবশ্যই, এখন অবধি অনেক উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। তবে সবমিলিয়ে আর্সেনালে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য কখনোই আফসোস করব না। আর সত্যি কথা বলতে, করোনা বিরতির আগে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে, সবশেষ কয়েকটি ম্যাচে অনেক মজা হয়েছিল।’

‘আমি সেই সময়টা অনেক উপভোগ করেছি এবং আমি ভেবেছিলাম, আমরা খুব ইতিবাচক পথ ধরে এগোচ্ছি। তবে বিরতির পরে দুর্ভাগ্যক্রমে সবকিছু পরিবর্তিত হয়েছে।’
তুরস্কের অন্যতম সেরা ক্লাব ফেনারবাচে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব দেয়নি ওজিলকে কেনার ব্যাপারে। তবে তাদের সভাপতি আলী কচ জানিয়েছেন, ৩২ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারকে দলভুক্ত করার ‘স্বপ্ন’ পূরণে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি কাছে আছেন তারা।
চলমান গুঞ্জনের পালে হাওয়া দিয়ে ওজিল বলেন, ‘আমি জার্মানিতে বেড়ে ওঠার সময় ফেনারবাচের ভক্ত হিসেবে বেড়ে উঠেছি। জার্মান-তুর্কি প্রতিটি লোকই যখন জার্মানিতে বেড়ে ওঠে, তখন তারা একটি তুর্কি দলকে সমর্থন করে এবং আমার পছন্দের দল ছিল ফেনারবাচে। (তুরস্কে) তারা স্পেনের রিয়াল মাদ্রিদের মতো। ওই দেশের বৃহত্তম ক্লাব।’

ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই স্পোর্টসের খবর অনুসারে, বেশ কয়েকটি ক্লাবের সঙ্গে আলোচনায় রয়েছেন ওজিলের এজেন্ট। তার সম্ভাব্য পরবর্তী ঠিকানার তালিকার উপরের দিকে রয়েছে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) দল ডিসি ইউনাইটেডের নামও। সেই প্রসঙ্গে অতীতে শালকে জিরো ফোর ও ভের্দার ব্রেমেনের হয়ে মাঠ কাঁপানো এই তারকা জানান, ‘অবসর নেওয়ার আগে আমি দুটি দেশে ফুটবল খেলতে চাই: তুরস্ক এবং যুক্তরাষ্ট্র।’
তবে একটি ক্লাবে কোনোভাবেই খেলবেন না ওজিল- টটেনহ্যাম হটস্পার, যারা কিনা আর্সেনালের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। দুদলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে নর্থ-লন্ডন ডার্বি। তার কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, ক্লাব না পেলে তিনি কি টটেনহ্যামকে বেছে নেবেন? তিনি জবাব দেন, ‘খুব সহজ প্রশ্ন। অবসর (নিয়ে ফেলব)।’
গত অক্টোবরে আর্সেনালের ইউরোপা লিগ ও প্রিমিয়ার লিগের ২০২০-২১ মৌসুমের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়ায় ‘ভীষণ হতাশ’ হয়েছিলেন ওজিল। তখন তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছিলেন, নিজের সর্বোচ্চটুকু উজাড় করে দিয়ে অনুশীলন করবেন এবং দলে ফেরার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন। তার সঙ্গে ক্লাবের চুক্তির মেয়াদ রয়েছে চলতি বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত।
Comments