প্রমাণ ছাড়াই পম্পেও বললেন

‘আল কায়েদার নতুন ঘাঁটি ইরান’

কোনো প্রমাণ ছাড়াই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও দাবি করেছেন, আল কায়েদার নতুন ঘাঁটি হচ্ছে ইরান।
Mike Pompeo
ওয়াশিংটন ডিসিতে বক্তব্য রাখছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। ১২ জানুয়ারি ২০২১। ছবি: এপি

কোনো প্রমাণ ছাড়াই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও দাবি করেছেন, আল কায়েদার নতুন ঘাঁটি হচ্ছে ইরান।

তিনি গতকাল মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এক বক্তব্যে এমন দাবি করেছেন বলে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পম্পেওর এমন দাবি তাৎক্ষণাৎ প্রত্যাখান করেছে ইরান।

পম্পেও বলেছেন, আল কায়েদার নেতারা তেহরানে একত্রিত হচ্ছেন এবং সংগঠনটির নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরির অনুসারীরা এখন সেখানে রয়েছেন।

তিনি আরও বলেছেন, ২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসনের আমলে পরমাণু চুক্তির সময় আল কায়েদার সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের উন্নতি হয়।

সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপসাগরীয় অঞ্চলে শিয়া-প্রধান ইরানের সঙ্গে মূলত সুন্নি-প্রধান আল কায়েদার সংঘাত দীর্ঘদিনের।

পম্পেও তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘আল কায়েদা নতুন ঘাঁটি পেয়েছে। সেটি হলো ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান।’

‘আমি বলতে চাই, ইরান হতে যাচ্ছে নতুন আফগানিস্তান।… আফগানিস্তানে আল কায়েদা পাহাড়ে লুকিয়ে থাকতো। কিন্তু, ইরানে আজ তারা শাসকগোষ্ঠীর ছায়াতলে থেকে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।’

আগামী ২০ জানুয়ারি মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তেহরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তিনি কোনো যুদ্ধের ডাক দেননি।

বলেছেন, ‘যদিও আমাদের যুদ্ধে যাওয়ার সুযোগ ছিল, আমরা তা করতেও পারতাম কিন্তু, তা করলে ঝুঁকি অনেক বেড়ে যেত।’

‘যুদ্ধের উসিলা’

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবির তাৎক্ষণিক জবাবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ এক টুইটে একে ‘যুদ্ধের উসিলা’ বলে মন্তব্য করেছেন।

আল জাজিরা’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পম্পেওর বক্তব্য ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান উস্কে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ২০০১ সালের এইউএমএফ আইনে আল কায়েদাকে বিশ্বের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে হামলার চালানোর কর্তৃত্ব দেশটির সেনাবাহিনীকে দেওয়া রয়েছে।

পম্পেওর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প প্রশাসন সেই আইন প্রয়োগ করে ইরানে হামলা চালাতে পারে বলেও প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।

‘বিশ্বাসযোগ্য নয়’

ওয়াশিংটন ডিসি-ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপন্সিবল স্টেটক্রাফটের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ট্রিটা পার্সি বলেছেন, পম্পেওর বক্তব্য ‘বিশ্বাসযোগ্য নয়’।

তিনি আল জাজিরা’কে বলেছেন, ‘যদি পম্পেওর হাতে কোনো সুনির্দ্দিষ্ট প্রমাণ থাকতো যে, কোনো না কোনো দিক থেকে ইরান ও আল কায়েদা জোট বেঁধেছে তাহলে তিনি অপেক্ষা করছেন কেন? ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র এক সপ্তাহ আগে তিনি এমন বিষয় সামনে আনলেন কেন?’

তার মতে, পম্পেও হচ্ছেন এমন এক ব্যক্তি যিনি গত চার বছর ধরে ইরানের ওপর হামলা চালানোর সব চেষ্টাই করে গেছেন।

‘তারা ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার ঘটনাও ঘটিয়েছে। হরমুজ প্রণালীতে উত্তেজনা সৃষ্টি করে রেখেছে,’ যোগ করেন পার্সি।

আল কায়েদা যোদ্ধা নিহত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও তার বক্তব্যে আরও বলেছেন যে, ১৯৯৮ সালে আফ্রিকায় দুটি মার্কিন দূতাবাসে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত আল কায়েদার আবু মুহাম্মদ আল-মাসরি গত বছরের ৭ আগস্ট ইরানে নিহত হয়েছেন।

তিনি এই ঘটনাকে ইরানে আল কায়েদার উপস্থিতির প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছিল, ইসরায়েলি এজেন্টেদের হাতে আল-মাসরি তার মেয়েসহ নিহত হয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ইরানে বসবাস করছিলেন।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টিকে ‘হলিউডি গল্প’ বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিল, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইরানভীতি’ ও দেশটির ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগ নীতির ধারাবাহিকতা।

পম্পেও তার বক্তব্যে ইরানের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপের কথাও বলেছেন। পাশাপাশি তিনি মুহাম্মদ আব্বাতায় বা আবদ আল রহমান আল মাগরিবি নামে পরিচিত আল কায়েদার সদস্য সম্পর্কে তথ্য দিতে পারলে ৭০ লাখ মর্কিন ডলার পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Fashion brands face criticism for failure to protect labour rights in Bangladesh

Fashion brands, including H&M and Zara, are facing criticism over their lack of action to protect workers' basic rights in Bangladesh, according to Clean Clothes Campaign (CCC)..One year after a violent crackdown by state actors and employers against Bangladeshi garment workers protesting

7m ago