পায়ে হেঁটে ৮ হাজার হন্ডুরান যুক্তরাষ্ট্রের পথে

প্রায় ৮ হাজার হন্ডুরাসবাসী পায়ে হেঁটে গুয়েতেমালা ও মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
Hondurans
পায়ে হেঁটে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হওয়া হন্ডুরাসের অভিবাসন-প্রত্যাশীরা গুয়েতেমালার রাস্তায়। ১৬ জানুয়ারি ২০২১। ছবি: রয়টার্স

প্রায় ৮ হাজার হন্ডুরাসবাসী পায়ে হেঁটে গুয়েতেমালা ও মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

হন্ডুরাসে সংঘাত, দারিদ্র ও সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয় থেকে মুক্তি পেতে মধ্য আমেরিকার দেশটির এই অধিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বলে গতকাল শনিবার সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির কারণে চরম অর্থ সংকটে পড়া দেশটির অধিবাসীরা সম্প্রতি বয়ে যাওয়া একাধিক শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড়ে বেশ বিপর্যন্ত।

গতকাল গুয়েতেমালার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৭ থেকে ৮ হাজার অভিবাসন-প্রত্যাশী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী গত শুক্রবার থেকে দেশটিতে ঢুকেছে।

এখন তারা মেক্সিকোর দিকে যাচ্ছেন বলেও গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।

গত নভেম্বরের সামুদ্রিক ঝড়ে গৃহহীন হওয়া চার সন্তানের মা মারিয়া জেসাস পাজ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘বাচ্চাদের খাওয়ানোর মতো কিছু নেই। আমাদের মতো হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় ঘুমাচ্ছেন।’

‘এ কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা জানি এই দীর্ঘ পদযাত্রায় আমাদের মৃত্যুও হতে পারে,’ যোগ করেন তিনি।

অভিবাসন-প্রত্যাশীদের আশা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাদের স্বাগত জানাবেন।

আগামী বুধবার ক্ষমতাগ্রহণ করতে যাওয়া বাইডেন ‘একটি স্বচ্ছ ও মানবিক অভিবাসন ব্যবস্থার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে সংবাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে অভিবাসন-প্রত্যাশীদের স্রোত ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গুয়েতেমালা, মেক্সিকো ও হন্ডুরাসের মধ্যে চুক্তি রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গণহারে অভিবাসন-প্রত্যাশীরা আসায় মেক্সিকো ও মধ্যআমেরিকার দেশগুলো যৌথভাবে নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি দেখভাল করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ও সীমান্তরক্ষা বিভাগের (সিবিপি) ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মার্ক মর্গান হন্ডুরাস থেকে রওনা হওয়া অভিবাসন-প্রত্যাশীদের সতর্ক করে এক বার্তায় বলেছেন, ‘আপনাদের সময় ও অর্থ অপচয় করবেন না। নিজেদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলবেন না।’

‘অভিবাসন-প্রত্যাশীদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না’ বলেও বার্তায় উল্লেখ করেছেন তিনি।

অভিবাসন-প্রত্যাশীদের পদযাত্রা থামাতে গুয়েতেমালা, হন্ডুরাস ও মেক্সিকো সেনা ও দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করেছে।

গত শুক্রবার গুয়েতেমালার সেনাবাহিনী ছোট বাচ্চাসহ কয়েক শ পরিবারকে আটক করেছে।

তারপরও, সেই পদযাত্রায় প্রতিদিন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

পদযাত্রায় অংশ নেওয়া ২৮ বছর বয়সী এদুয়ারো লানজা বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেছেন, তিনি এমন একটি দেশে যেতে চান যেখানে মানসম্মান নিয়ে বাঁচা যাবে।

৫১ বছর বয়সী নরমা পিনেদা বার্তা সংস্থাটিকে জানিয়েছেন, সামুদ্রিক ঝড় বয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি রাস্তায় ঘুমাচ্ছেন।

বলেছেন, ‘আমরা হন্ডুরাস ছাড়ছি কারণ সেখানে কোনো কাজ নেই। কোনো সরকারি সহায়তা নেই। আমাদের খাবার, কাপড়ের প্রয়োজন।’

আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি বলেছে, ‘এক সঙ্গে করোনা মহামারি, সামাজিক অস্থিরতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ এসে মধ্য আমেরিকার দেশগুলোতে নতুন মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago