‘হেলিকপ্টার রুবেল’ গ্রেপ্তার
কানাডিয়ান কাউন্সিল ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (সিসিআইসি) নামক একটি বিদেশি এনজিও সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে মো. রুবেল আহম্মেদ ওরফে ‘হেলিকপ্টার রুবেল’কে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে রাজধানীর কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের ইকোনমিক ক্রাইম অ্যান্ড হিউম্যান ট্রাফিকিং ডিভিশন। নিজেকে প্রমাণ ও মানুষের মনে বিশ্বাস স্থাপন করতে তিনি ঢাকা থেকে যাতায়াতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতেন বলে তার নাম হয়েছে ‘হেলিকপ্টার রুবেল’।
আজ সোমবার সিটিটিসি থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজধানীর উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেখানেই তিনি আম্তগোপনে ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরে। বিমানবন্দর থানায় হওয়া একটি মামলার সূত্র ধরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, রুবেল আহম্মেদ নিজেকে সিসিআইসি নামক একটি বিদেশি এনজিও সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে পরিচয় দিতেন।
তিনি সাত থেকে আট জন সহযোগী নিয়ে কুষ্টিয়া জেলার খোকসা থানাধীন তিন নম্বর বেতবাড়ীয়া ইউপি এলাকা পরিদর্শন করে জলবায়ুজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, দরিদ্র মানুষের তালিকা প্রস্তুত ও তাদের আবাসন প্রদান, স্কুল নির্মাণ, নদীভাঙন রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ, কৃষকদের মাঝে ডিপ টিউবওয়েল প্রদান এবং দুস্থদের চিকিৎসা সাহায্যসহ বিভিন্ন সেবামূলক আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থাপূর্বক ১৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকার প্রজেক্ট প্রস্তুত এবং এ সংক্রান্ত প্রজেক্ট পার্টনার, প্রজেক্ট ও স্কুলে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা রকম প্রলোভনের ফাঁদে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ভুয়া ফান্ডের টাকা ছাড়ের জন্য আড়াই শতাংশ হিসেবে ট্যাক্স ও বিভিন্ন খরচ বাবদ ৪৩ লাখ টাকাসহ কোটি টাকার বেশি পরিমাণ অর্থের প্রতারণা করে নিজেকে আত্মগোন করেন।
প্রাথমিক তদন্তে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করাই তার পেশা বলে জানা গেছে। নিজেকে প্রমাণ ও মানুষের মনে বিশ্বাস স্থাপন করতে তিনি ঢাকা থেকে যাতায়াতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতেন। কুষ্টিয়া, মাগুরা, খাগড়াছড়িসহ কয়েক জেলা থেকে তিনি কয়েক কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা আরও হয়েছে, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের সময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, একাধিক মোবাইল সিমকার্ড, ভ্যাট প্রদানের নির্দেশপত্র, কোটেশন গ্রহণপূর্বক কাজের অনুমোদন প্রদানের কপি, অনলাইনে কর পরিশোধ পদ্ধতি সংক্রান্ত ভুয়া কাগজপত্র, বিভিন্ন মানুষের ছবি ও এনআইডির ফটোকপি সংযুক্ত করা অনুদানপ্রাপ্তির ফাঁকা আবেদন ফরম ও চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন, দুস্থদের ঘর প্রদানের নামের তালিকা, সিসিআইসি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন কমিটির তালিকা, ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য ক্রয়ের অনুমোদনপত্র ও বিল ভাউচার, সিসিআইসির ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্টসহ বিভিন্ন কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
Comments