যা করতে এসেছিলাম, তার সবই করেছি: বিদায়ী ভাষণে ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে চার বছরের দায়িত্ব পালন শেষে বুধবার হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজ ছাড়ার আগে বিদায়ী ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যা করতে এসেছিলাম, তার সবই করেছি। এর বাইরেও আরও অনেক কিছু করেছি।’
ইউটিউবে পোস্ট করা ওই ভিডিওতে সবশেষে তিনি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বুধবার দুপুরে আমি যখন নতুন প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছি, আমি জানাতে চাই যে আন্দোলনে আমরা নেমেছি তা কেবল শুরু হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অনেক কঠিন যুদ্ধের মোকাবিলা করেছি, সবচেয়ে শক্ত লড়াই... কারণ আপনারা আমাকে এজন্যই নির্বাচিত করেছিলেন।’
গত নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখনো সেই ফলাফল পুরোপুরি মেনে নেননি ট্রাম্প। বুধবার নতুন প্রেসিডন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন জো বাইডেন।
শেষ দিনে ইউটিউবে পোস্ট করা ভিডিও বার্তায় নিজের স্ত্রী ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও পরিবারের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প। পাশাপাশি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, সেকেন্ড লেডি ক্যারেন পেন্সসহ প্রশাসনের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
২০ মিনিটের ওই ভাষণে উত্তরসূরি জো বাইডেনকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি ট্রাম্প।
সম্প্রতি ক্যাপিটল হিলের মারাত্মক হামলার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প। দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসিতও হন তিনি।
বিদায়ী বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘রাজনৈতিক সহিংসতা হলো আমেরিকান হিসেবে আমরা যা কিছু লালন করি এসব কিছুর ওপর আক্রমণ। এটি কখনই সহ্য করা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এজেন্ডা ডানপন্থি কিংবা বামপন্থিদের নিয়ে না, রিপাবলিকান বা ডেমোক্রেটদের নিয়েও ছিল না, এটি ছিল গোটা জাতির মঙ্গল নিয়ে।’
করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে চার লাখ মৃত্যু এবং দুই কোটি ৪০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হলেও সেসব ছাড়িয়ে আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে ইউএস ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের ওই ভয়াবহ তাণ্ডব।
শেষবেলায়ও করোনাভাইরাসকে ‘চীনা ভাইরাস’ হিসেবে সম্বোধন করেছেন ট্রাম্প। মহামারির কারণে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি সফলভাবে কাটিয়ে ওঠার কথাও জানান তিনি। মাত্র নয় মাসের মধ্যে দুইটি ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়ে ইতিহাস গড়ার কথাও বলেছেন তিনি।
এ ছাড়াও, স্বাস্থ্যসেবা খাতে সফলতা, বিচার ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরও সক্ষমতা অর্জন এবং পররাষ্ট্রনীতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাপক সফলতার কথা জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সাহসী কূটনীতি ও নীতিগত বাস্তবতার ফলস্বরূপ আমরা মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি অর্জন করেছি। এটি একটি নতুন মধ্যপ্রাচ্যের উদয় এবং আমরা আমাদের সৈন্যদের ফিরিয়ে এনেছি।’
বিদায়ী ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এ দশকে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিশেষ গর্বিত যে কিনা কোনো নতুন যুদ্ধ শুরু করেনি।’
তিনি আরও জানান, তার প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করেছে।’
চার বছর আগে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এলেও বিদায়বেলায় ট্রাম্পের জনসমর্থনের হার ৩৪ শতাংশে নেমে এসেছে। বিদায়ী কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে এটাই সর্বনিম্ন।
Comments