নাটোর আদালতের ব্যতিক্রমী রায়, গাঁজা সেবনের শাস্তি সেবামূলক কাজ

নাটোর
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

সেবামূলক কাজ করার শর্তে দশ অপরাধীকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ দিয়ে ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন নাটোরের আদালত।

গাঁজা সেবনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ওই দশ আসামিকে সাজার পরিবর্তে মাদকবিরোধী জনমত গঠন ও জনসচেতনতায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং হাসপাতালের সেবামূলক কাজ করাসহ আট শর্তে মুক্তি দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার নাটোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ এ রায় দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামিদের বিরুদ্ধে পূর্বে কোনো মামলা না থাকায় এবং নিজেরা অনুতপ্ত হয়ে দোষ স্বীকার করে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ না করার প্রতিজ্ঞা করেন। তাই তাদের সাজা না দিয়ে আটটি পৃথক শর্তে এক বছরের প্রবেশন সাজা প্রদান করেন আদালত। তবে, আদালতের শর্ত মোতাবেক প্রবেশন পালন না করলে তাদের সাজা ভোগ করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২ মার্চ লালপুর থানার বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামে গাঁজা সেবনের দায়ে এই দশ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষা করে তারা মাদকাসক্ত হিসেবে প্রমাণিত হন।

আদালতের দেওয়া শর্তগুলো হলো, আসামিরা কখনো মাদক সেবন, পরিবহন ও বিক্রয় করবেন না। তারা কখনো ধূমপান করবেন না। তাদের প্রত্যেককে প্রতি ১৫ দিনে একদিন করে পাবনা সদর হাসপাতালে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। তারা মাদকবিরোধী জনমত ও আন্দোলন এবং জনসচেতনতায় ব্যক্তিগতভাবে অংশগ্রহণ করবেন ও ভূমিকা রাখবেন। তাদের প্রত্যেককে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। এই আইন পড়া শেষ করে জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা, পাবনাকে অবহিত করবেন। তারা নিজ বাড়ির আঙিনায় ও তাদের গ্রামের মধ্যে সরকারি রাস্তার পাশে দশটি করে ফলজ ও দশটি করে বনজ গাছ রোপণ করবেন এবং বিষয়টি প্রবেশন কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন। প্রবেশন চলাকালীন তাদের বৃদ্ধ মাতা-পিতার দেখাশুনা ও ভরণ-পোষণের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রবেশন কর্মকর্তার সঙ্গে প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার দেখা করবেন ও তার অগ্রগতি জানাবেন।

প্রবেশন পাওয়া আসামিরা হচ্ছেন- আকরাম হোসেন (৩১) সোহেল রানা (৩৫) শহীদ শেখ (৫৫) জাহাঙ্গীর আলম (৩৭) লিটন শেখ (৪৫) মো. সিদ্দিক (৪৫) আরিফুল ইসলাম (২৫) আসলাম হোসেন (৩২) নাজমুল হোসেন (৩০) ও  মেহেদী হাসান (৩০)।

নাটোরের আইনজীবী মুক্তার হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের রায় মানুষকে ভুল পথ থেকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য বিরাট অবদান রাখতে পারে। আদালতের এমন ব্যতিক্রমী রায়কে সাধুবাদ জানাই।’

Comments

The Daily Star  | English
rohingya-migration

Persecuted by Arakan Army, Rohingyas fleeing to Bangladesh

Amid escalating violence in Myanmar’s Rakhine State, Rohingyas are trespassing into Bangladesh every day, crossing the border allegedly to escape the brutality of Myanmar’s rebel group, the Arakan Army (AA).

1h ago