ব্যাটিং কোচের নামই জানেন না সাকিব!

বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে জন লুইস যোগ দিয়েছেন প্রায় মাস দেড়েক হয়। এরমধ্যে তাকে নিয়ে অনেক আলোচনাও হয়েছে। বিশেষ করে তার কোয়ারেন্টিনে থাকা নিয়ে। কারণ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কোয়ারেন্টিনের নিয়মের বাঁধায় কারিকারি টাকা খরচ করে আনা এ কোচকে নির্দিষ্ট সময়ে পাওয়া নিয়ে ছিল শঙ্কা।
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে জন লুইস যোগ দিয়েছেন প্রায় মাস দেড়েক হয়। এরমধ্যে তাকে নিয়ে অনেক আলোচনাও হয়েছে। বিশেষ করে ইংল্যান্ড থেকে আসা এই কোচের কঠোর কোয়ারেন্টিনে থাকা নিয়ে হয় খবর। কারণ করোনার ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল থেকে আসায় কাড়ি কাড়ি  টাকা খরচ করে আনা এ কোচকে নির্দিষ্ট সময়ে পাওয়া নিয়ে ছিল শঙ্কা।

কিন্তু নতুন এ ব্যাটিং কোচের নাম জানেন না বাংলাদেশ দলের অনেকেই। এমনকি সাকিব আল হাসানের মতো সিনিয়র খেলোয়াড়ও নন। তার প্রমাণ পাওয়া গেল রোববার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দলের অনুশীলনে। 

উইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ দল এখন বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। রোববার সকালে সাগরিকায় অনুশীলন করে তামিম ইকবালের দল। তবে সাকিব যখন নেটে এলেন ততক্ষণে অনুশীলন পর্ব প্রায় শেষ। বোলারদের কেউ কেউ বিশ্রামে চলে গেছেন। আর নেটে যখন ব্যাটিংয়ের জন্য নামলেন এ অলরাউন্ডার, তখন বোলিং প্রান্তে নেই কেউ। গার্ড নেওয়ার জন্য ডাকার চেষ্টা করলেন অপর পাশে দাঁড়ানো ব্যাটিং কোচ জন লুইসকে। কিন্তু তার নামই মনে করতে পারছিলেন না সাকিব।

ব্যাটিং কোচ, ব্যাটিং পরামর্শক নানা নামে ডাকতে শুরু করলেন। এমনকি 'লেগ স্টাম্প' বলেও চিৎকার করতে থাকেন। উদ্দেশ্য তিনি যে গার্ড নিতে চাইছেন সেটা শুনে যদি তার দিকে নজর দেন লুইস। কিন্তু তাতেও সাড়া নেই লুইসের। বাধ্য হয়ে পাশের নেটে ব্যাট করা নাজমুল হোসেন শান্তকে বললেন, 'এই ব্যাটিং কোচের নাম কি-রে?'

মনে করতে পারছিলেন না শান্তও। তবে কিছুক্ষণ পর হঠাৎ মনে পড়ে তার। জানালেন, জন।

তখন সাকিব নাম ধরে ডাকেন কোচকে। এবার সাড়া দেন এ ইংলিশ। তার পরামর্শে সব ঠিক করে নেন সাকিব। এরপর মজা করেই তাকে বলেন, 'আমি তোমাকে বিশ্বাস করি না। তবে আমার হাতে এ মুহূর্তে কোনো বিকল্প নেই।'

ততক্ষণে তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, রুবেল হোসেনরা চলে আসেন। প্রথম বলে তাসকিনকে মোকাবেলা করেন সাকিব। ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় পেছনে। এরপর হাসানের বলেও প্রায় একই ঘটনা। তবে ধীরে ধীরে স্বাচ্ছন্দ্য আসে তার। অন্যদিকে তখন মনোযোগ দিয়ে তার ব্যাটিং দেখছিলেন ব্যাটিং কোচ লুইস। কোনো পরামর্শ দিতে হয়নি তাকে।

প্রথমে পেস বোলারদের বলে অনুশীলন করেন সাকিব, এরপর পাশের নেটে যোগ দেন স্পিন বোলিংয়ের অনুশীলনে।

এবার অবশ্য গার্ড নেওয়ায় সাহায্য করার জন্য বোলিং প্রান্তে অনেকেই ছিলেন। ঠিক করে দিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ছিলেন তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসানও। স্পিনে অবশ্য বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই ব্যাট করেন সাকিব। প্রতিটি বলেই ব্যাট চালানোর পর সে শট থেকে কতো রান হতে পারে সেটা বোলারদের কাছ থেকে নিশ্চিত হচ্ছিলেন। মেহেদীর বলে দারুণ একটি সুইপ করার পর জেনে নেন বল মিস করলে এলবিডাব্লিউ হতেন কি-না। যেন নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্যের দিকে ছুটছিলেন।

অনুশীলন হলেও সত্যিই লক্ষ্য নিয়েই ছুটছিলেন সাকিব। অনুশীলনের শেষ বলটি মোকাবেলা করেন আফিফের। আফিফকে বলেন ১ বলে ১ রান চাই আমার। আফিফ সে বলটি করেন হাই ফুলটস। আলতো টোকায় পেছনে ফেলে রান নিতে চান। কিন্তু বোলার জানিয়ে দেন, রানআউট হবেন তিনি। সাকিব বলেন, না আগেই পার হয়ে যাব। আফিফ মানতে চাইলেন না। তবে মৃদু হেসে জিজ্ঞাসা করলেন, 'ভাই, বলটা তো চাইলেই মারতে পারতেন।'

সাকিবের উত্তর, 'আমার লক্ষ্য এক। আমি মারবো কেন? এটাই তো অনুশীলন।'

Comments

The Daily Star  | English

12th national elections: 731 of 2,716 nominations rejected

Nomination papers rejected mainly for three reasons, says EC joint secretary

1h ago