চার সিনিয়র তারকার ফিফটিতে বাংলাদেশের ২৯৭
সাগরিকার উইকেট বরাবরই ব্যাটিং বান্ধব। এদিনও ব্যতিক্রম ছিল না। উইকেট খুব ফাস্ট না হলেও ব্যাটে বল আসছিল ভালোভাবেই। কিন্তু তারপরও স্বাগতিকদের ব্যাটিং সে অর্থে সাবলীল ছিল না। কেমার রোচ, জেসন হোল্ডার, শেল্ডন কট্রেলদের ছাড়া দ্বিতীয় সারির ক্যারিবিয়ান বোলিং লাইনআপের সামনে শুরুতে বেশ ধুঁকতে হয়েছে টাইগারদের। তবে দলের চার সিনিয়র তারকার ফিফটিতে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ।
সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৯৭ রান করেছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশের হয়ে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সাকিব ছাড়া বাকি তিন ব্যাটসম্যানই ব্যাট থেকে এসেছে ৬৪ রান করে। তবে মাহমুদউল্লাহ শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। দলীয় ১ রানেই খালি হাতে সাজঘরমুখী হন ওপেনার লিটন দাস। আলজেরি জোসেফের বল লেগে ঘোরাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যাটে না লাগায় এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন এ ওপেনার। তিন নম্বরে নেমে আবারও ব্যর্থ হন নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যক্তি ১২ রানে দুরূহ একটি ক্যাচ তুলে দিলেও শুরুতে ভালো কিছু র ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। উইকেটে প্রায় সেট হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাইল মেয়ার্সের বলে লিটনের আউটের অনুলিপি করে বিদায় নেন শান্ত (২০)।
এরপর সাকিবকে নিয়ে দলের হাল ধরেন তামিম। যদিও নিজের প্রথম বলেই বিদায় নিতে পারতেন সাকিব। মেয়ার্সের অফ স্টাম্পে রাখা বল লেগে ঘোরাতে গিয়ে বোলারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু অল্পের জন্য তা ধরতে পারেননি মেয়ার্স। সে যাত্রায় বাঁচলেও রানের জন্য প্রচুর সংগ্রাম করতে হয় সাকিবকে। ভুগতে হয়েছে তামিমকেও। ১১৬ বলে ৯৩ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান। একই দিনে এ জুটি নিজেদের দুই হাজার রানও পূরণ করে।
শুরুতে ধুঁকলেও ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে সাবলীল ব্যাটিং শুরু করেছিলেন তামিম। জেসন মোহাম্মদের বলে দারুণ একটি ছক্কা মেরে ভালো কিছুর আভাস দিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই জোসেফের বলে পুল করতে গিয়ে আকিলের হাতে ধরা পড়ে সাজঘরে ফেরেন এ ওপেনার। ৮০ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় শেষ পর্যন্ত করেন ৬৪ রান। এ রান করার পথে এদিন জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫০০ রান পূরণ করেন অধিনায়ক।
এরপর সাকিবের সঙ্গে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন মুশফিক। ৩৮ রানের জুটিও গড়েছিলেন। তবে ফিফটি করার পরেই বোল্ড হয়ে যান সাকিব। রেমন রেফারের স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে লাইন মিস করেন তিনি। ৮১ বলে ৩ চারে তার ব্যাট থেকে আসে ৬৪ রান। সাকিব আউট হয়ে গেলে রানের গতি বাড়াতে কিছুটা আগ্রাসী ব্যাট চালাতে থাকেন মুশফিক। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৫ বলে ৬৪ রান করেন তিনি। কিন্তু রিফারের বলে ছক্কা মারার পর আরও একটি হাঁকাতে গিয়ে ঠিকভাবে লাগাতে না পারলে কভারে ধরা পড়েন তিনি।
মুশফিক ফিরলেও আগ্রাসনটা ঠিকই দেখিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ দিকে ঝড় তুলে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে অপরাজিত থেকেছেন। শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ৪২ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় করেন ৬২ রান। উইন্ডিজের পক্ষে ২টি উইকেট উইকেট নিয়েছেন জোসেফ ও রিফার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৯৭/৬ (তামিম ৬৪, লিটন ০, শান্ত ২০, সাকিব ৫১, মুশফিক ৬৪, মাহমুদউল্লাহ ৬৪*, সৌম্য ৭, সাইফ ৫*; জোসেফ ২/৪৮, হার্ডিং ০/৮৮, মেয়ার্স ১/৩৪, রিফার ২/৬১, আকিল ০/৪৬, জেসন ০/১৬)।
Comments