অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে ‘ভারতীয়’ তানভীরের উঠে আসার গল্প
নব্বই দশকে ভারতের পাঞ্জাব ছেড়ে বাবা জগা সিং ভাগ্যান্বেষণে পাড়ি দেন অস্ট্রেলিয়ায়। সিডনিতে গিয়ে কাজ নেন ট্যাক্সি চালানোর। মা উপজিত সিং শুরু করেন হিসাবরক্ষকের চাকরি। তাদের সন্তান তানভীর সাঙ্ঘার জন্ম অস্ট্রেলিয়াতেই। নানা পথ ঘুরে অনেকটা ‘বাধ্য হয়ে’ লেগ স্পিন শুরু করা তানভীর এবার ডাক পেয়েছেন অজিদের টি-টোয়েন্টি দলে।
অস্ট্রেলিয়ায় বেড়ে উঠলেও ভারতের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক ছিল তানভীরের। পাঞ্জাবে শেকড়ের কাছে তাকে বারবার নিয়ে গেছেন বাবা-মা। ভারতে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার আঁচ লাগে তার গায়েও। কৈশোর থেকে অস্ট্রেলিয়াতেই শুরু করেন ক্রিকেটের পাঠ।
কব্জির মুন্সিয়ানায় লেগ স্পিনার হলেও শুরুতে পেসারই হতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গায়ে জোর ছিল কম। গতি আনতে না পারায় কোচদের পরামর্শে স্পিনের দিকেই মন দেন। সেখানেও বাধা। তার আঙুলগুলো অতটা লম্বা নয়। ফিঙ্গার স্পিন করা তাই মুশকিল। উপায় না দেখে কব্জির কারুকাজ শেখেন। মন দেন লেগ স্পিনে।
সেই বিদ্যাই বদলে দেয় তানভীরের গতিপথ। বয়সভিত্তিক বিভিন্ন ধাপে নিজেকে প্রমাণ করে ঠাঁই করে নেন অস্ট্রেলিয়ার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের দলে।
তার পরের এগোনোর পথে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন আরেক উপমহাদেশীয় লেগ স্পিনার ফাওয়াদ আহমেদ। বিগ ব্যাশ ফ্র্যাঞ্চাইজি সিডনি থান্ডার্সের সঙ্গে ফাওয়াদই পরিচয় করিয়ে দেন তানভীরকে। সেখানে আলো কেড়ে তানভীর এসে গেলেন জাতীয় দলেও। আগামীতে অ্যাডাম জাম্পার বিকল্প ভাবা হচ্ছে তাকে।
বুধবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ১৮ জনের দল দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তাতে তানভীরসহ আছেন অনেক নতুন মুখ। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওদের মাঠে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে অস্ট্রেলিয়া।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অজিদের টেস্ট সিরিজের সময়-সূচি চূড়ান্ত না হলেও তা ফেব্রুয়ারি মার্চেই হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সময়ে জৈব সুরক্ষা বলয়ের বিষয় থাকায় স্বাভাবিক কারণেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নারদের রাখতে পারেনি অজিরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টের স্কোয়াডেও এসেছে বদল। বাজে ফর্মের কারণে বাদ গেছেন ম্যাথু ওয়েড। টি-টোয়েন্টি দলে আবার তিনি আছেন। টেস্ট দলে প্রথমবার এসেছেন পেসার মার্ক স্টেকেটি। টিম পেইনের বিকল্প তৈরি করতে টেস্টে রাখা হয়েছে অ্যালেক্স কেয়ারিকে।
নিউজিল্যান্ড সফরে অস্ট্রেলিরার টি-টোয়েন্টি দল: অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), ম্যাথু ওয়েড (সহ-অধিনায়ক), অ্যাস্টন অ্যাগার, জেসন বেহরেনডর্ফ, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, বেন ম্যাকডারমট, রাইলি মেরেডিথ, জস ফিলিপ, কেন রিচার্ডসন, জেই রিচার্ডসন, ড্যানিয়েল স্যামস, তানভীর সাঙ্ঘা, ডার্সি শর্ট, মার্কাস স্টয়নিস, অ্যাস্টন অ্যাগার, অ্যান্ড্রু টাই, অ্যাডাম জাম্পা।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দল : টিম পেইন (অধিনায়ক), প্যাট কামিন্স (সহ-অধিনায়ক), শন অ্যাবট, অ্যালেক্স কেয়ারি, ক্যামেরন গ্রিন, মার্কাস হ্যারিস, জস হ্যাজেলউড, ট্রাভিস হেড, মোজেস হেনরিকস, মার্নাস লাবুশেন, ন্যাথান লায়ন, মাইকেল নিসার, জেমস প্যাটিনসন, উইল পুকোভস্কি, স্টিভ স্মিথ, মিচেল স্টার্ক, মার্ক স্টেকেটি, মিচেল সোয়েপসন, ডেভিড ওয়ার্নার।
Comments