রোহিঙ্গা প্রতিক্রিয়া: সু চি-সেনাবাহিনী একই
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ও ডি ফ্যাক্টো নেতা অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার এবং জরুরি অবস্থা জারির ঘটনায় বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শিবিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
সোমবার কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে বসবাসকারি বিভিন্ন বয়সের অন্তত ২০ জন রোহিঙ্গার সঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের পক্ষ থেকে কথা হয়।
টেকনাফের হ্নীলার শালবাগান এলাকায় অবস্থিত ২৬নং রোহিঙ্গা শিবিরের হেডমাঝি (রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা) বদরুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী যা করেছে তা কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। যদিও অং সান সু চি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কোন স্বার্থ রক্ষা করেননি তারপরও তিনি হলেন নির্বাচিত নেতা। সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করায় রোহিঙ্গাদের কোনো লাভ হবে না। কারণ ২০০৮ সালে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের প্রথম ভোটাধিকার হরণ করেছিল।’
উখিয়ার কুতুপালং সংলগ্ন শিবির ২/ই এর হেডমাঝি মোহাম্মদ নুর বলেন, ‘মিয়ানমার সেনারা ক্ষমতা দখল করায় রোহিঙ্গাদের স্বার্থ রক্ষা হবে না। এ ঘটনা নিয়ে রোহিঙ্গাদের কোনো আগ্রহ নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে শিবিরে আলোচনা হচ্ছে।’
হ্নীলার শালবাগান শিবিরের খদিজা খাতুন (৬০) বলেন, ‘আমি আর্মি ক্ষমতা নেওয়ায় খুশি। অং সান সু চির জন্য আমাদের নিজের ঘর বাড়ি ছেড়ে নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে ভিন্ন দেশে আশ্রয় নিতে হয়েছে। এরকম জীবন পার করতে হচ্ছে।’
কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিবের (রেজিস্টার্ড ক্যাম্প হিসাবে পরিচিত) চেয়ারম্যান রোহিঙ্গা নেতা হাফেজ জালাল আহমদ বলেন, ‘সাধারণ রোহিঙ্গাদের কাছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যে রকম তেমনি একই রকম অং সান সু চিও। নেতাদের গ্রেপ্তার, জরুরি অবস্থা জারি ও ক্ষমতা দখলের ব্যাপারটি মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল এনএলডি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন হবে এমনটি আশা করা যায় না।’
বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্ত এলাকার শূণ্য রেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নেতা দিল মোহাম্মদ মিয়ানমার সেনাবাহিনী নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন।
Comments