কেন রিভিউ নিল না বাংলাদেশ?
চা-বিরতির খুব বেশি বাকি নেই। কিন্তু হঠাৎই যেন অস্থির হয়ে উঠলেন আগের পুরোটা সময় ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া সাদমান ইসলাম। জোমেল ওয়ারিকানের বলে বাজে শটে এলবিডব্লিউ হয়ে ৫৯ রান করে বিদায়। অথচ রিভিউ নিলেই তিনি বেঁচে যান!
ওয়ারিকানের বলে সুইপ খেলতে গিয়েছিলেন ১৪ মাস পর টেস্ট খেলতে নামা সাদমান। তিনি পরাস্ত হলে জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার শরফুদৌল্লাহ সৈকত। দ্বিতীয় টেস্ট ফিফটি পাওয়া সাদমান দ্বিধায় ছিলেন। এসব ক্ষেত্রে অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানই দিতে পারেন আদর্শ পরামর্শ। ১৫৪ বল মোকাবিলা করা বাঁহাতি সাদমান ছুটলেন মুশফিকুর রহিমের দিকে। অভিজ্ঞ মুশফিক রিভিউ নেওয়ার আলাপে সায় দিলেন না। মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়লেন সাদমান।
অথচ রিপ্লেতে দেখা গেল, লেগ স্টাম্পের ওপর ‘পিচড’ হওয়া বল বেরিয়ে গেছে স্টাম্প অনেকখানি মিস করে! তখন অবশ্য আক্ষেপ করা ছাড়া কিছুই করার নেই।
আরেকটু ‘ক্লোজ কল’ হলেও রিভিউ নেওয়া বিলাসিতা ছিল না কয়েকটা কারণে। প্রথমত, নতুন নিয়মে ব্যাটিং ও বোলিং দলের এক ইনিংসে রিভিউ আছে তিনটি করে। বিফল হলেই তবে কাটা পড়বে একটি রিভিউ। এতগুলো রিভিউ কাজে লাগানোর জন্যই তো!
রিভিউ নেওয়ার দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, যে ব্যাটসম্যানের জন্য নেওয়া, তিনি তো উইকেটে থিতু। তখন পর্যন্ত দলের সর্বোচ্চ স্কোরার। থিতু ব্যাটসম্যানের জন্য ঝুঁকি নিয়েও রিভিউ নেওয়ার প্রচলন রয়েছে ক্রিকেটে।
আরেকটি কারণে রিভিউ নিতে পারত বাংলাদেশ। যে কোনো সেশনের ঠিক আগে উইকেট হারানো নিয়ে একটা শঙ্কা থাকে বাংলাদেশের। রিভিউ নিলে যেটুকু সময় লাগত, তাতে চা-বিরতির আগে আর কোনো বলও মোকাবিলা করতে হতো না।
২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আগের সফরে বাংলাদেশ যে ধরনের উইকেট বানিয়েছিল, বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের প্রথম দিনে উইকেট সেরকম মনে হয়নি। শুষ্ক এই উইকেট কিছুটা নিচু বাউন্সের। কিন্তু উইকেটে নেই অসমান বাউন্স। ব্যাটসম্যানদের জন্য টিকে থাকাটা এখানে বেশ সহজ। অন্তত প্রথম দিনে তো বটেই।
তবে সাবলীল খেলতে খেলতেও বাংলাদেশ ১৪০ রানে হারায় ৪ উইকেট। এর একটি বাদে বাকিগুলো বড় আক্ষেপের কারণ। রিভিউয়ের এই ভুল বাদ দিলে নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরেছেন আত্মঘাতী রান আউটে। অধিনায়ক মুমিনুল হক অকারণে তুলে মেরে ক্যাচ দিয়ে নিয়েছেন বিদায়। অর্থাৎ ধৈর্য ধরা ছাড়া ক্যারিবিয়ান বোলারদের খুব একটা খাটতে হয়নি এসব উইকেট পেতে।
Comments