রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সহযোগিতায় আস্থা আছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সহায়তা অব্যাহত থাকার বিষয়ে বাংলাদেশের আস্থা আছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ বুধবার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের এখনো চীনের ওপর আস্থা আছে। সবার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব বজায় আছে। (প্রত্যাবাসন আলোচনায়) চীনের অবস্থানের অগ্রগতি কিছুটা হলেও বাস্তবায়নের পথে আছে। চীনের ওপর আমরা আস্থা রাখছি।’
এছাড়াও, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ রোধে বাংলাদেশের সীমান্ত আরও সুরক্ষিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে, গতকাল মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি আটকে দেয় চীন।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হামলার পর প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ঘটনাকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে। তবে, জাতিসংঘে এ বিষয়ে আলোচনার সময় রাশিয়া ও চীন মিয়ানমারকে সমর্থন দেয়। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অবশ্য গণহত্যা মামলা চলছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা থেকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নেপিডোতে এখনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ঢাকায় চীন ও মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। তবে, তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা (প্রত্যাবাসন) প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে চাই। মিয়ানমারের কোনো ব্যক্তির সঙ্গে নয়, সরকারের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। এর আগে, ’৮০ ও ’৯০-এর দশকে সামরিক শাসনামলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের জন্য প্রত্যাবাসন একটি সুযোগ। তারা যদি এটিকে সম্ভব করে, তবে অন্যরা তাদের সঙ্গে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারে সামরিক শাসন ফিরে আসায় পশ্চিমা দেশগুলোর আশঙ্কা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। এটা যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত সুরক্ষিত করেছে বাংলাদেশ।’
‘২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার চালানো হয়। আমাদের জনগণ তাদের স্বাগত জানিয়েছিল। এখন জনগণ আর তা চায় না। আমরা আমাদের সীমানা সুরক্ষিত করেছি। রোহিঙ্গারা যদি তাদের দেশ ছেড়ে পালায়, তবে এবার অন্যরা তাদের গ্রহণ করুক। আমরা আর তাদের নিতে চাচ্ছি না,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশ মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানাবে নাকি নতুন সরকারকে স্বাগত জানাবে এমন প্রশ্নের জবাবে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি তিনি।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী। আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। সুতরাং, মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক, এটাই আমরা চাই।’
আরও পড়ুন:
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি আটকে দিলো চীন
Comments